পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (ত্রয়োদশ ভাগ).pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$3. iश्डिा পরিষৎ-পত্রিকা | >* **१i*; নিম্ন শ্রেণীর ব্যক্তিগণের চেষ্টায় প্ৰাচীন জগতের ইতিহাস কতক পরিমাণে রক্ষিত হইয়াছে, সুতরাং সেই উপাখ্যানগুলিতে অনেক বিকৃত কল্পনা ও আবৰ্জনা প্ৰবেশ লাভ করিয়াছে, “কিন্তু তথাপি তন্মধ্যে যে ক্ষীণ ঐতিহাসিক সত্যের প্রভা প্ৰাপ্ত হওয়া যায়, তাহাতে প্ৰাচীনকালের অনেক লুপ্ত তত্বের উদ্ধার পাইবার সম্ভাবনা ৷ ধৰ্ম্মমঙ্গলের পুথি যখন বহুলোকে ভক্তি-ভাবে শুনিতে লাগিল-তখন ডোমাচাৰ্য্যগণকে বিতাড়িত করিয়া ব্ৰাহ্মণগণ উহা অধিকার করিয়া লইলেন এবং বৌদ্ধ উপাখ্যানগুলিতে যথাসম্ভব হিন্দু-ধৰ্ম্মের ভাব প্ৰদান করিয়া ধৰ্ম্মমঙ্গল কাব্য নিজস্ব বলিয়া প্রচার করিলেন । প্ৰাচীনতম ধৰ্ম্মমঙ্গল কাব্যগুলিতে বৌদ্ধপ্রভাব সুস্পষ্ট। পরবর্তী কাব্যগুলিতে হিন্দুলেখকগণ ইহার কতকটা নূতন গড়ন দিতে চেষ্টা করিয়াছেন। মন্দিরের ইষ্টকে পুৰ্বকালে অনেক মসজিদ রচিত হইয়াছে, সম্মুখের গুম্বজ ও খিলান দেখিয়া তাহ ধরা পড়ে না, কিন্তু ইষ্টকগুলির পশ্চাতের দিকে হিন্দু দেবতার মূৰ্ত্তি অঙ্কিত আছে ; বালির আস্তর উঠাইয়া ফেলিলেই সত্য আবিষ্কৃত হইয়া পড়ে। ধৰ্ম্মমঙ্গলের পুথির ও গণেশ বন্দনা ও ব্রাহ্মণ্যপ্ৰতাবের দিকটা ফিরাইয়া লইলে অপর দিক হইতে অজ্ঞাত বৌদ্ধ জগতের একটা সুস্পষ্ট আভাষ ফুটয় উঠবে। য বস্তুতঃ এই পুথি আদৌ ব্ৰাহ্মণগণের হস্তে ছিল না। খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে রামাই পণ্ডিত ধৰ্ম্ম-পুজার একখানা পদ্ধতি প্ৰণয়ন করেন, সেই পদ্ধতি এবং তৎসাময়িক ধৰ্ম্মপূজার মন্ত্র তন্ত্র কতকগুলি পাওয়া গিয়াছে।--তাহাতে আছে, “ধৰ্ম্মরাজ যজ্ঞনিন্দ করে "সিংহলে শ্ৰীধৰ্ম্মরাজ বহুৎ সন্মান।” অন্যত্র “আগেতে ছিলেন প্ৰভু ললিত অবতার।” দুৰ্লভঃ মল্লিক কৃত গোবিন্দচন্দ্রর গানে ধৰ্ম্ম-সেবক গোবিন্দচন্দ্ৰ হাড়িপাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেন। শ্ৰেষ্ঠ ধৰ্ম্ম কি ? হাড়িপা। তদুত্তরে বলিয়াছিলেন “বাছা শুন গোবিন্দাই। অহিংসা পরমধৰ্ম্ম যারপর নাই।” একখানি প্ৰাচীন ধৰ্ম্ম-পুজার পদ্ধতিতে যাজপুরে ধৰ্ম্মঠাকুরের সঙ্গে ব্ৰাহ্মণগণের ঘোর বিবাদের কথা উল্লিখিত আছে, এবং অনেকগুলি ধৰ্ম্মমঙ্গলেই "হাড়িপা”, “কালুপ।” প্রভৃতি ডোমাচাৰ্য্যগণের কথা বিশেষ শ্ৰদ্ধার সহিত উল্লিখিত আছে। এই পুথি লেখকও প্ৰাচীন বৌদ্ধৱীতি অনুসরণপূর্বক “ওঁ নমো ধৰ্ম্মায়া” বলিয়া পুথি শেষ করিয়াছেন। এই ধৰ্ম্ম আখ্যানে নানা দিক্‌ হইতে সুস্পষ্ট বৌদ্ধ প্রভাব লক্ষিত হয়। বস্তুতঃ এই বৌদ্ধধৰ্ম্মংক্রান্ত ডোমাচাৰ্য্যগণের নিজস্ব কাব্য হাতে লইয়া ব্ৰাহ্মণ মাণিকচান্দকৈ স্বপ্নের বরপ্রাপ্তি স্থলে একটা কৈফিয়ৎ দিতে হইয়াছিল। ডোমপুরোহিতের সঙ্গে এক পংক্তিতে বসিয়া পাছে জাতিচু্যত হন; মাণিকচাঁদ এই আশঙ্কার ভীত হইয়া পড়িয়াছিলেন। তিনি ধৰ্ম্মঠাকুরের প্রত্যণদেশের উল্লেখ করিয়া লিখিয়াছেন- ه “এতেক শুনিয়া মোর উড়িল পরাণ। জাতি যায়। তবে প্ৰভু করি। যদি গান।” কিন্তু মাণিকচাঁদের পূর্বে অন্ততঃ আরও দুইজন ব্রাহ্মণ এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিয়াছিলেন, ময়ূরভট্ট ও রূপরামের কথা উল্লেখ করিয়া কবিবর নিজকে আশ্বস্ত করিয়াছেন।