পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V) সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । [ » Rei গর্জনই সেই মূলীভূত কারণ। মেঘ-গর্জন হইতেই ভেকের ডাক, সৰ্পের আহারান্বেষণচেষ্টা, ময়ুর কর্তৃক সৰ্পনাশ ও ভেবের রক্ষা কল্পিত হইতে পারে’। ইহাই কি এ স্থলে ভােববিকাশের প্রণালী ? এইরূপ রচনা পরিহাসপার হইলে, সকলে ইহার রসাস্বাদন করিয়া আমোদিত হইয়া থাকেন; কিন্তু ইহা শব্দার্থের উৎপাদক ও বিকাশক হইলে পণ্ডিতেরা ইহাকে আবর্জন বলিয়া পরিত্যাগ করেন। শ্ৰীযুক্ত উমেশচন্দ্র বটব্যাল মহাশয় সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকার চতুৰ্থভাগের তৃতীয় সংখ্যায় যে হরিনামের শব্দতত্ত্ব বিবৃত করিয়াছেন, সে প্ৰবন্ধে তিনি হরি শব্দের সর্ববিধ অর্থের পরস্পর সম্বন্ধ স্থাপনে চেষ্টা করেন নাই। তিনি ইহার হরিদ্বর্ণ, সোম, অশ্ব ও বিষ্ণু এই চারিটি অর্থের ক্ৰমিক সম্বন্ধ এবং হরিদ্বর্ণের তাৎপৰ্য্যার্থের ক্রমবিকাশ লক্ষ্য করিয়া হরিদ্বর্ণকেই হরি শব্দের ঐ চতুৰ্ব্বিধ অর্থের মূলীভুত কারণঝপে স্থির করিবার প্রয়াস পাইয়াছেন। অনেকাৰ্থধ্বনিমঞ্জরীতে এক স্বর্ণবর্ণের উল্লেখ থাকিলেও হরি শব্দে হরিদ্বর্ণও বুঝায়। যথা মেদিনী,- “বাঁচাবৎপিঙ্গহারিতোঃ”। বটব্যাল মহাশয় সিদ্ধান্ত করিয়াছেন, সোমলতা হরিদ্বর্ণ। ইহার তিনি কোন প্রমাণ দেন নাই। গ্রন্থে সোমলতার যে বিবরণ দৃষ্ট হয়, তাহাতে অংশুমান, রজত প্ৰভ, কনকাভি ও বিচিত্ৰবৰ্ণমণ্ডলচিত্ৰিত এই কয়েকটি বিশেষণে বর্ণের আভাস পাওয়া যায়। ইহাদের একটিও হরিদ্বর্ণ জ্ঞাপক নহে ; সুতরাং প্ৰমাণ ভিন্ন সোমের হরিদ্বর্ণািত্ব স্বীকার করা যাইতে পারে না । বৈদ্যাক শাস্ত্ৰে সোম ওষধিরাজ বলিয়া বর্ণিত হইয়াছে। ওষধি শব্দে জ্যোতিলতা ও ফলপাকান্ত বৃক্ষাদি বুঝায়। রাত্রিকালে যে সকল লতা উজ্জল দৃষ্ট হয়, সে সকলকে জ্যোতিৰ্লতা কহে। সবুজ বর্ণের অন্ধকার রাত্ৰিতে দীপ্তি কবির কল্পনায়ই শোভা পায়। সোম শব্দের নানার্থ। যথা হেমচন্দ্ৰ,- “সোমত্ত্বোবধীতদারসেন্দুয়ু, দিব্যৌষধ্যাং ধনসারে সমীরে পিতৃদৈবতে, বসু প্ৰভেদে সলিলে বানরে। কিন্নরেশ্বরে।” যে সোমের রস পানীয়, সেই সোম “এক প্রকার খৰ্ব্বাকার বৃক্ষ” নহে, উহা লতা ; এই বিষয়ে পূৰ্বাচাৰ্য্যগণের মতভেদ দৃষ্ট হয় না। ভট্টকাব্যের টীকায় “সোমরসং সোমলাঙ্গানিস্কৃষ্টং যজ্ঞয়ং পানীয়-বিশেষং” সোমরসের এরূপ বর্ণনা দৃষ্ট হয়। সোমলতার পঞ্চদশটি পত্র। চন্দ্রের ক্ষয়-বৃদ্ধির ন্যায়। সোমলতারও ক্ষয়-পক্ষে প্ৰতিদিন এক একটি পত্রের ক্ষয় হইতে থাকে, এবং বৃদ্ধি পক্ষে প্ৰতিদিন এক একটি পত্রের উৎপত্তি হইতে থাকে। চলকসংহিতায় ইহার প্ৰেমাণ पूछे दम। शुथ,- 譬 “সোমনামৌষধিরাজঃ পঞ্চদশপর্ণ, সামাইৰ হাঁয়তে বৰ্দ্ধতে চা।” সোমের ( চন্দ্রের) ন্যায় পক্ষাভেদে হ্রাস বৃদ্ধি আছে বলিয়াই এই লতার নাম সেমি হইয়াছে।