পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

St. সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিক : ; t་མ་ཤར་ལt , , ইউরোপের আধুনিক ঐতিহাসিকদিগের যেরূপ সুযোগ আছে, গ্ৰীস বা রোমের ঐতিহাসিক** দিগের যেরূপ সুযোগ ছিল না। হিরদোঁতস্য যে সময়ে আবির্ভূত হয়েন, থুসিদাইদিস যে সময়ে পিলোপনিসসের যুদ্ধের বর্ণনায় ব্যাপৃত থাকেন, জেনোফন যে সময়ে দশসহস্রের প্রত্যাবর্তনের বিবরণে স্বকীয় লিপিনৈপুণ্যের পরিচয় দেন, সে সময়ে সমাজ অধিকতর সভ্যতাসম্পন্ন হয়। নাই ; রাজনৈতিক ঘটনা সম্বন্ধে লোকে অধিকতর জ্ঞান লাভ করে নাই ; রাজ্যের বিবিধ শৃঙ্খলা বা বিপ্লবী লোকের দৃষ্টিপাথবৰ্ত্তী হয় নাই ; বিভিন্ন স্থানে গমনাগমনের পথ তাদৃশ সুগম ৷ হইয়া উঠে নাই ; বিবিধ স্থানের জ্ঞানী ব্যক্তিদিগের সহিত আলাপপরিচয়েরও তাদৃশ সুবিধা ঘটে নাই। ক্রমে সময়ের পরিবর্তনের সহিত সমাজের অবস্থা পরিবৰ্ত্তিত হইয়াছে। প্রাচীন সময় অপেক্ষা আধুনিক সময়ে সংসারের সমস্ত বিষয় জানিবার অধিকতর সুযোগ ঘূটিয়াছে। বাণিজ্যের বিস্তার হইয়াছে। অধিকাংশ দেশ অধিকতর সভ্যতাসম্পন্ন হইয়। উঠিয়াছে। গম্বুব্য পথ নিরাপদ ও সুগম হইয়াছে। বিভিন্ন জনপদের জ্ঞানী ব্যক্তিদিগের সহিত আলাপপরিচয়ের সুবিধা হইয়াছে। ভিন্ন ভিন্ন স্থানের বিবরণ সংগ্ৰহ করাও অপেক্ষাকৃত অনায়াসসাধ্য হইয়া উঠিয়াছে। ঐতিহাসিকদিগের পক্ষে এই সকল সুযোগ । অল্প লাভজনক নহে। প্ৰাচীন কালের ঐতিহাসিকগণের পক্ষে এ সকল সুযোগ ঘটে নাই । সুতরাং প্রাচীন ঐতিহাসিকগণ জ্ঞানসংগ্রহে ও বহুদৰ্শিতালাভে। আধুনিক ঐতিহাসিকদিগের ন্যায় সুযোগ প্ৰাপ্ত হয়েন নাই। তঁহারা এক দিকে যেমন অধিকতর প্রতিভাসম্পন্ন ছিলেন, অপর দিকে সেইরূপ মার্জিত ভাব ও দূরদর্শিতায় আধুনিক ঐতিহাসিকদিগের নিম্নগণ্য হইয়াছিলেন। প্ৰাচীন ইতিহাসের সহিত আধুনিক ইতিহাসের লিপি প্ৰণালীর তুলনা করিয়া দেখিলে সাধারণতঃ এই বুঝা যায় যে, আধুনিক ঐতিহাসিকগণ যেমন বৈজ্ঞানিকভাব, দার্শনিক তত্ত্ব ও মার্জিতলিপিকৌশলে প্ৰাধান্য লাভ করিয়াছেন, প্ৰাচীন ঐতিহাসিকগণ সেইরূপ প্ৰতিভায়, উদ্দীপনায় ও সারল্যে শ্রেষ্ঠ হইয়াছেন । পূৰ্ব্বে উক্ত হইয়াছে যে, আধুনিক সময়ে জ্ঞানলাভের যেরূপ সুযোগ হইয়াছে, প্রাচীন সময়ে সেরূপ ছিল না। প্ৰাচীনকালে সর্বত্র বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ সৰ্ব্বত্র জ্ঞানবিস্তারে তৎপর থাকে নাই। বিজ্ঞানের প্রভাবে বিচ্ছিন্ন জনপদ সকল একসূত্রে সম্বন্ধ হইয়া ‘উঠে নাই। জ্ঞানরাজ্যের অধিনায়কগণ পরস্পরের মনােগত ভাবের আদানপ্রদানের তাদৃশ সুযোগ প্রাপ্ত হয়েন নাই। প্রাচীনকালে যাহারা জ্ঞানপিপাসু। ছিলেন, উদ্ভাবনা ও গবেয়ণায় র্যাহারা প্ৰসিদ্ধি লাভ করিতে আগ্ৰহান্বিত হইয়া উঠিয়া- ? ছিলেন, তঁহাদিগকে বহু কষ্টে, মিশর প্রভৃতি দেশে যাইতে হইত। তাহারা সেই সকল যজ্ঞানচর্চার স্থানে অভীষ্ট বিষয়সংগ্রহে ব্যাপৃত থাকিতেন। তঁহারা দার্শনিক, ধৰ্ম্মযাজক, কবি প্ৰভৃতির সহিত আলাপ করিয়া নানাবিষয়ে জ্ঞানলাভপুর্বক স্বদেশে প্ৰত্যাবৃত্ত হইতেন এবং স্বদেশীয়দিগকে আপনাদের বহুকষ্টলন্ধ বহুমূল্য বিষয়ের পরিচয় দিতেন। স্বদেশীয়গণ ভঁৰ্থীদের গুণের সম্মান করিতে কখনও বিমুখ হইত না। যাহাঁদের উদ্যম ও অধ্যবসায়ের