পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/৩১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ Slo J ৩। অতঃপৰ শ্ৰীযুক্ত দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুব মহাশয় ‘উপসৰ্গ বিচার” শীর্ষক প্ৰবন্ধ পাঠ করিলেন। পাঠাস্তে-শ্ৰীযুক্ত চন্দ্রনাথ বসু মহাশয় বলিলেন যে, প্ৰবন্ধ তাঁহাকে এরূপ ভাল লাগিয়াছে যে, তিনি বিশেষ কাৰ্য্য অবহেলা করিয়াও শুনিয়াছেন। প্ৰবন্ধের বিষয় যেরূপ গুরুতর তাহাতে বৈয়াকরণ ভিন্ন কেহ তাহার আলোচনা করিতে পারে না । প্ৰবন্ধে যে চিন্তা, পাণ্ডিত্য ও বিচার শক্তির নিদর্শন পাওয়া গিয়াছে, তাহ অসাধারণ শক্তির পরিচায়ক। প্ৰবন্ধ অতি চমৎকার হইয়াছে। বক্তা সৰ্ব্বান্তঃকরণে প্ৰবন্ধ-লেখক মহাশয়কে ধন্যবাদ দিবার প্রস্তাব করিলেন । শ্ৰীযুক্ত বিহারীলাল সরকার মহাশয় বলিলেন, প্ৰবন্ধ এত উৎকৃষ্ট হইয়াছে যে, তিনি প্ৰাণ খুলিয়া প্ৰবন্ধ-লেখক মহাশয়কে ধন্যবাদ দিতেছেন। প্ৰবন্ধ-লেখক আদর্শ । দার্শনিক। প্ৰবন্ধও দার্শনিক ভাবে পূর্ণ। হঠাৎ আলোচনা করিতে সাহস হয় না। উপসর্গের বিচার সুবিচারই হইয়াছে। এরূপ ভাবের বিচার সংস্কৃতেও নাই। ভরত কর্তৃক উপসর্গ তত্ত্ব গ্রন্থে কতকটা নুতন ভাবের উপসর্গের আলোচনা আছে। কিন্তু বোধ হয়, এরূপ ভাবে নহে। প্ৰবন্ধ সুন্দর ও হৃদয়গ্ৰাহী হইয়াছে। উপসর্গ সম্বন্ধে র্তাহার বক্তব্য এই যে, এক উপসর্গের যেমন বিভিন্ন অর্থ, সেইরূপ দুই উপসর্পোেরও এক অর্থ আছে। সেইজন্য সকল স্থলে অর্থ ঠিক করা দায় এবং পণ্ডিতদিগের মধ্যেও মতভেদ দেখা যায়। যেরূপ প্ৰবন্ধ অদ্য পঠিত হইল, পরিষদে সেইরূপ প্ৰবন্ধেরই পাঠ হওয়া উচিত। উপসর্গের যেরূপ ভাবে বিচার হইল, অন্যান্য বিষয়েরও এইরূপ বিচার বাঞ্ছনীয় । শ্ৰীযুক্ত শশিভূষণ মুখোপাধ্যায় মহাশয বলিলেন যে, প্ৰবন্ধেব বিষয় অতি গুরুতর এ বিষয় হঠাৎ আলোচনা করা যায় না । সভাপতি মহাশয় বলিলেন-প্ৰবন্ধটী বড়ই মনোহর হইয়াছে, ইহাতে প্ৰসঙ্গতঃ অনেক ! দুরূহ বিষয়ের অবতারণা করা হইয়াছে, হঠাৎ সে সকলের সমালোচনা করা অসম্ভব । প্ৰবন্ধে পাণ্ডিত্য, গবেষণা ও চিন্তাশীলতার যথেষ্ট পরিচয় আছে । তথাপি এরূপ বিষয়ে সৰ্ব্বাংশে মতের ঐক্য হওয়া অসম্ভব, সুতরাং যে যে স্থলে প্ৰবন্ধের মতের সহিত তাহার মতের অনৈক্য আছে বলিয়া বোধ হইল, সেই সেই স্থলের কিঞ্চিৎ সমালোচনা করিবেন। প্ৰবন্ধপাঠকালে বিচাৰ্য বিষয়গুলি যথাক্রমে স্মরণ করিয়া রাখিতে পারেন নাই বলিয়া সমালোচনাতেও কোন ক্রম লক্ষিত হইবে না। প্ৰবন্ধের শেষভাগে লেখক মহাশয় উপসৰ্গাদিগের এককালে স্বতন্ত্র সত্তা ছিল, অর্থাৎ স্বতন্ত্রভাবে অর্থ বোধকতা ছিল, এইরূপ মত প্ৰকাশ করিয়াছেন, এই মতটী সন্দিগ্ধভাবে উপন্যস্ত হইলেও উহাতে সন্দেহ বা অনুমানের অবসর নাই। উপসর্গগুলি যে এক সময় ধাতু হইতে বিচ্ছিন্নভাবে ব্যবহৃত হইত ও ধাত্র নিরপেক্ষ হইয়া স্ব স্ব অর্থ প্রকাশ করিত, সে বিষয়ে সন্দেহ নাই। লৌকিক ও বৈদিক উভয়বিধ সাহিত্যেই ইহার ভুরি ভুরি, নিদর্শন পাওয়া যায়। বেদে ।