পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চম ভাগ).pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৮ ৷৷ সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা । Y ret আপনি ত্যজিলেন প্ৰাণ দেবনিরঞ্জন। ব্ৰহ্মা বিষ্ণু মহেশ দেবতা তিনজন ॥ মড়া কান্ধে করিয়া বুলিএ অবনীতে। কহেন উলুক মুনি ক্রুিদেব সাক্ষাতে ॥ তিলমাত্ৰ আপোড়া পৃথিবী ঠাঞি নাই। ইহার বৃত্তান্ত কিছু না জানি গোসাঞি ৷ উলুকের কথা শুনি দেব ত্রিন্মোচন। বাম উরুভাগে কৈল ধৰ্ম্মের শাসন ৷ বিষ্ণু হৈল ১. তাতে ব্ৰহ্মা হুতাশন । বাম উরুভাগে পোড়া গেল নিরঞ্জন ৷ জন্ম জরা মৃত্যু যার নাই ত্ৰিভুবনে। হেন শিবের নিন্দা তুমি কর কি কারণে ॥” . কবির উল্লিখিত এই নিরঞ্জন ঠাকুরটী কে ? ইনি কি দুঃখে মরিলেন ? ব্ৰহ্মা বিষ্ণু মহেশেরই বা সে জন্য পিতৃ মাতৃদায় কেন ? তাহারা মড়া কঁধে করিয়া ঘুরিতে গেলেন কেন ? পৃথিবীতে অদগ্ধ স্থানেই বা তাহার দাহ ব্যবস্থা কে দিল ? উলুক মুনিটিই বা কে ? আর শেষে মৃত নিরঞ্জনকে দাহ করিবার জন্য বিষ্ণুকে কাষ্ঠ ও ব্ৰহ্মাকে হুতাশন হইতে হইল। • ত্ৰিলোচন বাম উরুতে দাহ স্থান দিলেন,-ইহারই বা ব্যাপার কি ?--কিছুই সহজে বুঝা গেল না ! নিরঞ্জন শব্দটী হইতে ইহার মধ্যে কোন বৌদ্ধসংশ্ৰব নিরূপণ করা যাইতে পারে কি না তাহা বৌদ্ধতত্ত্বাভিজ্ঞগণ মীমাংসা করিবেন। যাহা হউক, তাহার পর রাজা বলিলেন,- “কেবা কার পুত্ৰবধু কেবা কার পিতা। মরিলে সম্বন্ধ নাই শুন। এই কথা ৷” সুতরাং পুত্রের কল্যাণার্থে বা তোমার অনুরোধে “জন্মেও না ছাড়িব মহেশ ঠাকুর। শুনরে অজ্ঞান বুড়ী এথা হৈথে দূর ৷” W. কাজেই শীতলা বুড়ী চটিয়া গেলেন, রাগে নয়ন দুটী লাল হইয়া উঠিল ; এমন সময় জরাসুর আসিয়া দেখা দিল। শীতলা ক্ৰোধে জ্বরকে চন্দ্ৰকেতুর সর্বনাশ করিতে আদেশ দিলেন। জর বিক্ৰম করিয়া চলিয়া গেল। জর হাটে, বাজারে, গৃহে, কুটীরে ছড়াইয়া পড়িল, সঙ্গে সঙ্গে বসন্ত ফুটিল। জাতি বিশেষে, কৰ্ম্মচারী বিশেষে মা শীতলা বিভিন্ন প্ৰকার বসন্ত নিযুক্ত করিলেন। তাহার পর রাজার রাজত্বে লোকজন, হাতী ঘোড়া, পশু পক্ষী মরিয়া উজাড় হইল । শেষে রাজার উনসত্তরটী পুত্ৰও মরিল। রাণী কঁাদিয়া আকুল হইলেন, তবু রাজা পুজা করিলেন না, বরং “রাজা বলে শীতলা করেছে। যদি বাদ ।। ৬ কদাচিত আমি তার না লব প্ৰসাদ ॥” ঠিক কথা ! রাজা প্ৰকৃত মামলাবাজ বটে, প্ৰবলের সঙ্গে লড়িতে হইলে হারিয়া হারানই পরামর্শসঙ্গত বটে। তাহার পর শিবগুণানুকীৰ্ত্তন করিয়া রাণীকে প্ৰবোধ দিলেন, শিবেরই শরণা লইতে বলিলেন-এবং নিজেও দিবারাত্রি কুশাসনে বসিয়া শিবারাধনা