পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (ষষ্ঠ ভাগ).pdf/২২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সন। ১৩০৬ } অলঙ্কার-শাস্ত্ৰ । Sćł ১৭০ খৃষ্টাব্দে হারমোজিনিস নামক সুপ্ৰসিদ্ধ পণ্ডিত অলঙ্কার বিষয়ে কয়েক খানি গ্ৰন্থ প্ৰণয়ন করেন এবং অলঙ্কারবিদ্যার একটি ইতিহাস লেখেন। ২৬০ খৃষ্টাব্দে লাঞ্জাইনস অলঙ্কার সম্বন্ধে একখানি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ রচনা করিয়াছিলেন। ৩১৫ খৃষ্টাব্দে এপথোনিয়াস “একসাসাইজেস” নামক যে অলঙ্কার গ্রন্থ প্ৰণয়ন করেন, তাহা তাহার পূর্ববৰ্ত্তী অনেক আলঙ্কারিকের গ্ৰন্থকে অতিক্রম করিয়াছিল। র্যীশু খৃষ্টের তিরোভাবের পর ৪০০ বৎসর মধ্যে আথেন্স, স্মার্ণ, রোডস, টার্সস, এণ্টিয়ক, আলেকজেন্দ্ৰিয়া ( আলিসান্দর), মাসেলিয়া এবং অন্যান্য বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে অলঙ্কারবিদ্যার সম্যক অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা প্ৰচলিত হইতে আরম্ভ হয় এবং আলঙ্কারিকগণই পরমবিদ্বান ও সর্বপ্রধান অধ্যাপক রূপে পরিগণিত হন। এস্থলে উল্লেখ করা উচিত। ৭০ খৃষ্টাব্দে রোমসম্রাট ভেসূপেসিয়ান অলঙ্কার বিদ্যার অনুশীলনের নিমিত্ত প্ৰত্যক্ষভাবে প্রচুর পরিমাণে আর্থিক সাহায্য করেন। তদনন্তর ১১৭ হইতে ১৮০ খৃষ্টাব্দ মপ্যে। হাড়িয়ান, এণ্টোনাইন প্ৰভৃতি সম্রাটগণের সময়ে অলঙ্কারবিদ্যার প্রচারের সাহায্য করাই অতি প্রয়োজনীয় কাৰ্য্য বলিয়া পরিগণিত ছিল। মধ্যযুগে ( রোমের ধ্বংসের পর ইংবেজ-প্ৰভৃতি জাতির উত্থানের পূর্ব পৰ্য্যন্ত) ব্যাকরণ, তর্কবিদ্যা ও অলঙ্কার-শাস্ত্ৰই ছাত্ৰগণের প্রথম চারি বৎসরের পাঠ্য ছিল । তৎপর তিন বৎসর ছাত্ৰগণ সঙ্গীত-বিদ্যা, অঙ্ক-শাস্ত্ৰ, জ্যামিতি ও জ্যোতিঃ-শাস্ত্ৰ অধ্যয়ন করিয়া বি, এ, এম, এ, উপাধি লাভ করিতেন ! উল্লিপিত সাতটিই উচ্চ অঙ্গের বিদ্যা বলিয়া পরিগণিত ছিল । ১৫৪৯ খৃষ্টাব্দে লিয়ো ন্যানকক্স, ১৫ ৫৩ খৃষ্টাব্দে টমাস উইলসন, ১৫৫৫ খৃষ্টাব্দে টাঙ্গুইলিন, ১৫৫৭ খৃষ্টাব্দে কোর্কে লস প্রভৃতি আলঙ্কারিকগণ বহুসংখ্যক অলঙ্কার গ্ৰন্থ রচনা করেন। তদনন্তর লর্ড বেকন যে অলঙ্কার গ্রন্থ রচনা করেন, তাহাই ১৮শ শতাব্দীতে ইউরোপীয় কৃতবিদ্যসমাজে সমধিক গৌরব লাভ করে। তাতার পর ক্যাম্পবেলের “অলঙ্কারদর্শন”, হোয়োটুলির “অলঙ্কারমঞ্জরী” বা “এলিমেনস অফ রেটরিক্‌” প্ৰভৃতি গ্ৰন্থ বিরচিত হওয়ায় নব্য সমাজে অলঙ্কারবিদ্যার সমধিক আলোচনা হইতে আরম্ভ হয় । বিদেশীয় অলঙ্কার-বিদ্যার সৃষ্টি ও উন্নতির বিষয় যৎকিঞ্চিৎ উক্ত হইল ; এখন দেশীয় অলঙ্কার-শাস্ত্রের স্বরূপ ও অবয়বের বিষয় কিঞ্চিৎ বিবৃত করিব। কাব্যের লক্ষণ, বাক্যের স্বরূপ, রস, ভাব, ধ্বনি, গুণীভুতব্যঙ্গা, দোষ, গুণ, রীতি, অলঙ্কার প্রভৃতি প্ৰধানতঃ অলঙ্কার-শাস্ত্রের প্রতিপাদ্য। কিন্তু এই সকল বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন গ্ৰন্থকার ভিন্ন ভিন্ন পথ অবলম্বন করিয়াছেন। অনেক স্থলেই তাঙ্গাদের পরস্পর ঐকমত্য দৃষ্ট হয় না, সে সমুদয়ের সূক্ষ্ম রূপ ভেদ প্ৰদৰ্শন নিম্প্রয়োজন । শব্দই ভাষা-সৃষ্টির উপাদান। দার্শনিক ও আলঙ্কারিকগণ ভাষার সম্বন্ধে অনেকে অনেক প্রকার তর্ক ও জটিল প্রশ্নের অবতারণা করিয়াছেন, এখানে সে সমুদয়ের আলোচনা করা অসম্ভব। প্রাচীন আলঙ্কারিক দণ্ডী শব্দের প্রশংসা উপলক্ষে লিখিয়াছেন ;- “এই সংসারে পুৰ্ব্বঋষিগণ কর্তৃক প্রকৃতিপ্ৰত্যয়ভেদে সংসাধিত সংস্কৃত উক্তি ও দেশ