পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (ষোড়শ ভাগ).pdf/২১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

• •७००७ ] শূন্যপুরাণ ܘ ܗ ܓ উচ্চারণ হওয়াতে লেখকের অভিরুচি অনুসারে কোন একটা দ্বারা শব্দ বানান হইয়া থাকে । এক এক লেখকের এক এক বর্ণের দিকে ঝোক থাকে । ১৩১৩ সালের সাহিত্য-পরিষৎ পত্রিকায় যে “সুৰ্য্যের পাঁচালী ছাপা হইয়াছে, তাহ ২১৮ বৎসর পূৰ্ব্বে চট্টগ্রামে লেখা । তাহাতে দেখিতেছি, ষ স স্থানে শ, এবং য স্থানে জ আছে। ঐ সালের পত্রিকায় “মহারাষ্ট্রপুরাণ’ প্রসঙ্গে শ্ৰীব্যোমকেশ মুস্তফী মহাশয় লিখিয়াছেন, “ণকার স্থানে সৰ্ব্বত্ৰ নকারের প্রয়োগ এবং যকার স্থানে সৰ্ব্বত্ৰ জকারের প্রয়োগ, ও শকার স্থানে সর্বত্ৰ সকার প্রয়োগ ; র্যাহারা, প্রাচীন রীতি বলিয়া ঠিক করিয়া রাখিয়াছেন, তঁহাদের যুক্তি কি আমি তাহা জানি না, কিন্তু কোন পুথিতে তাহ ধ্রুব সত্য বলিয়া দেখিতে পাই না ।” এই কথাই ঠিক বোধ হয় । কারণ আজকাল আমরা শব্দের কৃত্ৰিম বানানে যতটা বাধা পড়িয়াছি, প্ৰাচীনের ততটা পড়েন নাই । সেকালে মুদ্রাযন্ত্র ছিল না, হাতের লেখা পুথি পড়িয়া এবং ধ্বনি শুনিয়া লেখককে শব্দের বানান করিতে হইত। যাহারা সংস্কৃত জানিতেন, তঁাহারা বাঙ্গালা শব্দ কিরূপ বানান করিতেন, ইহা জানিতে না পারিলে সেকালের বানানের রীতি ধরা পড়িবে না । অশিক্ষিত গ্ৰাম্য লিপিকারের বানানকে বাঙ্গালা শব্দের বানান মনে করিলে আজকালকার আদালতের মুহুরীকে दक्षिाढा ভাষার লেখক স্বীকার করিতে হইবে। ৫ । বৰ্ত্তমান শূন্যপুরাণের সময় এবং লেখক । তথাপি শূন্যপুরাণের শব্দের বানান প্ৰাচীনতার সাক্ষ্য দিতেছে। একটি বানান বিশেষ দ্রষ্টব্য । মাআধর, ধিআন, নারা অন, এবং দিআ, লইআ, করি আ ইত্যাদিতে প্ৰায় সর্বত্র “অ আ দেখিতেছি। আজকাল আমরা একটা নূতন স্বরবর্ণ আবিষ্কার করিয়াছি। ‘য়’ টাকে আমরা হলন্ত “অ” করিয়া ফেলিয়াছি। অ আ ই উ এ ও স্থানে য় য়া য়ি য়ু য়ে য়ো লিখিতেছি। এই যে পরিবর্তন, ইহা অল্পকালে ঘাঁটিতে পারে নাই। তিন শত বৎসর পুর্বে কৃষ্ণদাস কবিরাজ চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থে য় য়া লিখিয়াছিলেন। সেই সময়ের মুকুন্দরাম কবিকঙ্কণেও য় য়া পাই । কৃষ্ণদাস ও কবিকঙ্কণ উভয়েই সংস্কৃতভাষায় পণ্ডিত ছিলেন । শূন্যপুরাণেও দুই এক স্থানে য়া আছে । ওড়িয়াভাষায় স্না-কার হলন্ত অ হয় নাই। এখানে আর এক প্রশ্ন মনে আসে। বাঙ্গালাভাষায় অকারান্ত বিশেষ্য শব্দ কতকাল হইতে হলন্ত উচ্চারিত হইয়া আসিতেছে ? শূন্যপুরাণে হাআ, জঅ, জঅকার আছে । কোন কোন স্থান পড়িলে মনে হয়, সেকালে হাআ, জঅ, এইরূপই উচ্চারিত হইত। ( অবশ্য ) জয় শব্দের জঅ' উচ্চারণ একবারে ভুল।) শূন্যপুরাণের নিম্নের কবিতাটি যতি দিয়া পড়িতে চেষ্টা করিলে ঐ অনুমানে আসিতে হইবে । |- চৌদিকে জঅজঅ' আনন্দেত পুরল কৌতুকেত বাজ এ বাজনা ।