আহ্বানে কর্ণপাত করিলেন না![১] দুর্গবাসিগণ সশস্ত্রদেহে জাগরিত রহিয়াছেন মনে করিয়া, নবাব-সেনা শিবিরে প্রস্থান করিল; কিন্তু সে রজনীতে ইংরাজদুর্গে কেহ আর নিদ্রালাভের অবসর পাইলেন না।
রজনী দুই ঘটিকার সময়ে সামরিক সভার অধিবেশন হইল। নিম্নশ্রেণীর সেনাদল ভিন্ন আর আর সকলেই সে সভায় উপনীত হইলেন। দুই ঘণ্টা তর্ক বিতর্কের পর স্থির হইল যে, “আর দুর্গরক্ষার জন্য পণ্ডশ্রম করা অনাবশ্যক, তহবিল পত্র লইয়া পলায়ন করাই সুপরামর্শ![২] কিন্তু কখন পলায়ন করিতে হইবে, কিভাবে পলায়ন করিতে হইবে, সে সকল কথার কিছুমাত্র মীমাংসা হইতে পারিল না।[৩]
নদীতীরে যে সকল ডিঙ্গী নৌকা বাঁধা ছিল, তাহার অনেকগুলিই রাতারাতি চলিয়া গিয়াছিল; পর্তুগীজ-রমণী ও বালক বালিকাদিগকে জাহাজে উঠাইবার জন্য প্রভাতে গুপ্তদ্বার উন্মোচন করিবামাত্র, ভাগীরথীতীরে মহাকলরব উপস্থিত হইল। সে কলরবে কেহ কাহারও কথায় কর্ণপাত করিবার অবসর পাইল না; সকলেই সর্ব্বাগ্রে জাহাজে উঠিয়া পলায়ন করিবার জন্য ব্যস্ত হইয়া উঠিল। ইহাতে যাহা হইবার তাহাই হইল;—কেহ কেহ ডিঙ্গী উল্টাইয়া জলমগ্ন হইল, কেহ কেহ নবাব-শিবিরের তীরন্দাজদিগের হাতে দেহত্যাগ করিল, কেহ বা কায়ক্লেশে জাহাজে উঠিবামাত্র, নোঙ্গর তুলিয়া