বলেন,—একে কাপুরুষ, তাহাতে দুর্ব্বলচিত্ত; সুতরাং ইংরাজভয়েই সিরাজদ্দৌলা উর্দ্ধশ্বাসে পলায়ন করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। মুসলমান ইতিহাস-লেখক বলেন, “পিপীলিকা নিতান্তই ক্ষুদ্র কীট; তথাপি বহুসহস্র পিপীলিকার সমবেত শক্তির নিকট বনশার্দ্দূলকেও পরাভব স্বীকার করিতে হয়?”[১] বলা বাহুল্য যে, এইরূপ পিপীলিকাদংশনেই সিরাজদ্দৌলার সর্ব্বনাশ হইল!
রাজধানীতে প্রত্যাগমন করিতে না করিতে সিরাজদ্দৌলার পরাজয়কাহিনী চারিদিকে বিদ্যুৎদ্বেগে প্রচারিত হইয়া পড়িল। লুণ্ঠনভয়ে, যে যেখানে পারিল, পলায়ন করিতে আরম্ভ করিল! মোগলপ্রতাপ তখন ধীরে ধীরে অস্তগমন করিতেছিল, মুসলমান আমীর ওমরাহেরা স্বার্থরক্ষার আশায় মহারাষ্ট্রসেনার নিকট, ফিরিঙ্গী বণিকের নিকট এবং পার্ব্বত্য পাঠান সেনার নিকট, বহুবৎসরের শাসনগৌরব পরিহার করিয়া একে একে রঙ্গভূমি হইতে অবসর গ্রহণ করিতেছিলেন; ভারতবর্ষের রত্নসিংহাসন বালকের ক্রীড়াকন্দুকে পরিণত হইয়াছিল;—সুতরাং সিরাজদ্দৌলার সকল চেষ্টাই বিফল হইয়া গেল। তিনি রাজধানী রক্ষার জন্য পাত্রমিত্রগণকে পুনঃ পুনঃ আহ্বান করিতে লাগিলেন; অন্যের কথা দূরে থাকুক, তাঁহার শ্বশুর মহম্মদ ইরিচ খাঁ পর্যন্তও তাহাতে কর্ণপাত না করিয়া পলায়ন করিতে কৃতসংকল্প হইলেন।[২] তাঁহার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করিয়া প্রাণরক্ষার জন্য সকলেই