পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
সিরাজদ্দৌলা
করিম। ঐটুকু প্যাঁচ করেছ। ইংরাজ যেমন সদালাপী, ওদের গোলা তেমন নয়। এখানে আলাপ কর্‌তে এলেই কিছু প্যাঁচ। তবে দেখ চাচারা, যখন লড়্‌তে এসেছ, গাঙ্গ্‌পার হ’য়ে চ’লে গিয়ে, ডন্ ফেলগে।
করিম ব্যতীত সকলের প্রস্থান
নবাবীটে আমারই সাজে। যে ব্যাটার তিন কুলে কেউ নাই, সেই তো বাঙ্গ্‌লার নবাব। সিরাজদ্দৌলার এখন তবু এক আধ ব্যাটা আছে, নিদেন বেগমগুলো। আমার বাবা তিন কুলে কেউ নাই, আমিই পাকা নবাব। এই বোঝ না কেন বাবা, নবাবটা কোথায় তা একবার কেউ খোঁজ নিলে না।
করিমের প্রস্থান

সিরাজদ্দৌলা, মীরমদন ও সৈন্যগণের প্রবেশ

সিরাজ। মীরমদন কি হবে, কি হবে! কোথা যাব!
মীরমঃ। জনাব, কোন শঙ্কা নাই। ইংরাজ-সৈন্য বিমুখ হয়েছে, ও আমাদের তোপধ্বনি। এইখানে অপেক্ষা করুন। আমি এখনই ইংরাজের পশ্চাৎ পশ্চাৎ গিয়ে কেল্লার ভিতর প্রবেশ করি। আজই ইংরাজ ধ্বংস হবে।
সিরাজ। না মীরমদন, যেও না, ইংরাজ ধ্বংসে আমার প্রয়োজন নাই। এই নবাবী—এই সুখের আশায় উন্মত্ত হয়েছিলেম! দিবারাজ কণ্টক-শয্যায় শোবার জন্য নবাবী গ্রহণ করেছিলেম!
মীরমঃ। জনাব জনাব, অমন কচ্ছেন কেন? অনেক দুর্গম রণে নির্ভয় অন্তরে সৈন্য সঞ্চালন করেছেন। ইংরাজ পরাস্ত;—ঐ শুনুন, বিপক্ষের তোপধ্বনি নাই। মুহুর্মুহুঃ আমাদেরই কামান গর্জ্জন হচ্ছে! একটু স্থির হোন, আমি সমূলে ইংরাজ উচ্ছেদ করি।