পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় অঙ্ক
৯৯
বলবীর্য্য প্রকাশে প্রয়োজন নাই! সূর্য্যোদয়ে যেমন গ্রহজ্যোতি নির্ব্বাপিত হয়, ইংরাজ উদয়ে সেইরূপ ভারতবীর্য নির্ব্বাপিত! ভারত-স্বাধীনতা ইংরাজের পদতলে। ঘোর নিশায় অচিরে ভারত আবরিত হবে। কালচক্র পরিবর্ত্তনে কারো সাধ্য নাই। অদ্যই যেন সন্ধিপত্র আমার নিকট প্রেরিত হয়। যাও যাও বিলম্ব করো না, এই দণ্ডেই দূত প্রেরণ করো।
অমাত্যগণের প্রস্থান
মীরমঃ। হা জননী জন্মভূমি!
সিরাজ। মীরমদন আক্ষেপ ক’রো না, আক্ষেপে আর উপায় নাই। যে দিন ইংরাজের জলতরী, বাঙ্গ্‌লার বন্দরে উপস্থিত হয়েছে, সেই দিন আশা-ভরসা বিলুপ্ত। ভারতবাসী ভারতবাসীর যুদ্ধে ক্লান্ত! মহারাষ্ট্রীয়েরা বলীয়ান—ভারতবাসী! তাদের দৌরাত্ম্যে বাঙ্গলা জজ্জরীভূত;—তাদের দৌরাত্ম্যে ইংরাজের ফোর্ট উইলিয়ম নির্ম্মিত হয়েছে,—ভারতবাসীর দৌরাত্ম্যে ইংরাজের বলবৃদ্ধি। বাল-সূর্য্যের কিরণে মধ্যাহ্ণ-তপনের তাপ অনুভব কর্‌তে পাচ্ছি না। ভারত বিচ্ছিন্ন! ভারতসন্তান পরস্পরের শত্রু! উদ্যমশীল, একতায় আবদ্ধ, উদ্যোগী পুরুষসিংহ—কার সাধ্য তাদের দমন করে!
মীরমঃ। জনাব, তুচ্ছ শত্রুর কেন প্রশংসা কচ্ছেন? বাঙ্গলায় কি বীর-বীর্য্য বিলুপ্ত, আপনার সৈন্য কি অস্ত্র ধারণে অক্ষম? বাঙ্গলার বীরত্ব শত রণে পরীক্ষিত; জনাব, তবে কেন উৎসাহহীন হচ্ছেন? কৃতদাস এখনো জীবিত, এখনো সৈন্য সঞ্চালনে অক্ষম নয়, পিধানে অসি আজ্ঞা-প্রতীক্ষায় বিচঞ্চল। ইষ্টক নির্ম্মিত ফোর্ট উইলিয়াম্‌, বীর প্রবাহ রোধ কর্‌তে সক্ষম হবে না। তবে কেন শত্রুর গৌরব বর্দ্ধন ক’রে, সন্ধির প্রস্তাব কচ্ছেন? তবে কেন ইংরাজ অজেয়