পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
সিরাজদ্দৌলা
ইংরেজ দেখে আস্‌ছি। তাদের এক জনের মুখেও তো শুনি নাই, যে তোমরা পড়সি, তোমাদের এক ধর্ম্ম;—তোমাদের রং তো সমান দেখ্‌ছি, ব্যাভারটা এমন হলো কেন?
সিরাজ। দেখুন মুঁসা লা, মন্ত্রীদের মন্ত্রণা আমরা সম্পূর্ণ অবগত। সেই নিমিত্তই বিবেচনা কচ্ছি, ইংরাজের সহিত সন্ধি ভঙ্গ না ক'রে কপট মন্ত্রীদের অগ্রে দমন করা যাক।
মুঁসালা। জনাব, এখনি দমন করিয়া দেন, ইংরাজ ভয় পাইয়া যাইবে। ইহাদের দমন করিলে, আর কেহ ইংরাজের সাহায্য করিতে আগু হইবে না।
সিরাজ। মুঁসালা, অমাত্যেরা সকলে সম্ভ্রান্ত, এদের কৌশলে দমন করা প্রয়োজন;—নচেৎ একটা বিদ্রোহ উপস্থিত হবে।
মুঁসালা। জনাব, গোস্তাকি মাপ হয়,—কৌশল উহাদের সহিত চলিবে না। যতই কৌশল করিবেন, তলে তলে উহারা যাস্তি কৌশল করিবে।
করিম। সাহেব রং মেখেছ,—সাদা মুখে ওমন সরল কথা বেরোয় না! তোমরা ইংরাজের সঙ্গে মিটিয়ে ফেলো, ওদের পারবে না। এক হাত গলায় আর এক হাত পায়ে দেওয়া, তোমাদের কর্ম্ম নয়।
মুঁসালা। সাহেব, আপনি অতি বিজ্ঞ। ইংরাজ-চরিত্র সম্পূর্ণ বুঝিয়াছেন। যদি আপনার মত নবাবী কার্য্যে দুই চারি আদ্‌মি থাকিত, আলিনগরের সন্ধি হইত না, ইংরাজ কলিকাতায় থাকিত না।
করিম। সাহেব, তাহ’লে তোমাদেরও একটু প্যাঁচ পড়তো, চন্দননগর হ’তে রসদ বেচ্‌তেও পার্‌তে না। কিন্তু দেখ্‌লেম খালি রসদই বেচ’—প্যাঁচোয়া চাল তোমাদের আসে না;—তাহ’লে বল্‌তে—‘এই আমাদের ফৌজ এলো বলে, এই আমরা কোলকাতা