পাতা:সিরাজদ্দৌলা - গিরিশচন্দ্র ঘোষ.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
সিরাজদ্দৌলা

মোহনলাল ও লছমনসিংহের প্রবেশ

মোহন। এত শীঘ্র রাজ্যে বিদ্রোহের সূচনা! সকতজঙ্গের কর্ম্মচারীরা কার্য্যকুশল বটে। কই—কে—কোন ফকির?
লছমন। আজ্ঞে, এই দিকেই এসেছে।
মোহন। আর যে একজন স্ত্রীলোক বল্‌লে?
লছমন। আজ্ঞে, সে লোকের অন্দরে প্রবেশ ক’রে ঘরে ঘরে জাঁহাপনার অপবাদ দিচ্ছে, আমার ভগ্নীর নিকট সংবাদ পেলেম।
মোহন। কি বলে?
লছমন। বলে—এইবার নবাব এসে দেশে আর সতী রাখ্‌বে না। ইংরাজদের ভয় ছিল, তাই এতদিন দৌরাত্ম্য করে নাই। আবার না কি নবাবদূত রাণী ভবানীর কন্যা তারাবাইকে আন্‌বার জন্য প্রেরিত হয়েছে। আর ফকির ব’লে বেড়াচ্ছে, যতদিন সকতজঙ্গ না বাঙ্গ্‌লার গদীতে বসে, ততদিন দেশ ছেড়ে সকলে পালাও। নবাব এসে সব কোতল কর্‌বে, ঘর পোড়াবে, জলে ডোবাবে। যার বাহুতে বল আছে, সে সকতজঙ্গের পক্ষ হও।
মোহন। সেই স্ত্রীলোকের কি বেশ?
লছমন। ফকিরণীর বেশ।
মোহন। আমায় নবাব মুর্শিদাবাদ রক্ষার নিমিত্ত রেখে গিয়ে দেখছি বড় সুযুক্তির কার্য্য করেছেন। বিদ্রোহী সকতজঙ্গের কর্ম্মচারীরা, এরূপ রাজ্যে প্রজার মনে বিদ্বেষ জন্মাবার চেষ্টা কর্‌বে, আমার ধারণা ছিল না। এই সকল বিদ্রোহীদের দমন করা অতি প্রয়োজন।
লছমন। হ্যাঁ জনাব, অনেক নির্ব্বোধ প্রজার মনে আতঙ্ক জন্মেছে।
মোহন। ফকির অতি দুর্জ্জন! কিরূপ অপবাদ রটনা কচ্ছে দেখো।