প্রজাবৎসল এবং উদাৰ চরিত্র নরপতি ছিলেন। তিনি ঈদৃশ্য বদ্যান্য ছিলেন যে, লক্ষ টাকার নৃত্যুনে কাহাকেও পুরষ্কার প্রদান করিতেন না। বিজ্ঞ ঐতিহাসিক কাজী মিনহাজ-উস-সিরাজ জারজানী বলেন যে, একদা রাজ্যের প্রধান প্ৰধান জ্যোতিষী, পণ্ডিত এবং ব্ৰাহ্মণগণ রাজা লাত্মণোয়কে রাজসভায় অবগত করান যে, প্রাচীন গ্ৰন্থ সকলে বর্ণিত আছে, কোনও নির্দিষ্ট সময়ে এই রাজ্য মুসলমান ধর্মাবলম্বী হইয়া তুকীদিগেব হন্তে পতিত হইবে। রাজনা ঐ সময় উপস্থিত হইলে, নৃপতি আমাদিগের সহিত এক মতাবলম্বী হইয়া তুকীদিগের অত্যাচার হইতে অব্যাহতি পাইবার জন্য এই রাজ্য ত্যাগা.করতঃ অন্যত্র গমন করিবেন। রাজা লক্ষ্মণোয় এই বিবরণ শ্রবণান্তর জিজ্ঞাসা করিলেন : “যিনি সেই আক্রমণকারী মুসলমানদিগের সেনাপতি হবেন, শাত্রে কি তাঁর কোন বিশেষত্ব বর্ণিত আছে, যাদ্ধারা তাকে চিনতে পারা যাবে?” | VS) | পণ্ডিতবর্গ তদুত্তরে রাজাকে নিবেদন করিল : “হী, শাস্ত্ৰে কথিত আছে, তিনি যখন দণ্ডবিমান হবেন, তখন তাঁর করাঙ্গুলি জানুদেশের নিম্ন পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।” রাজা লক্ষ্মণোয় এতন্ত্রবণে বিশ্বন্ত অনুসন্ধাননিপুণ গুপ্তচরদিগকে রাজ্যের চতুর্দিকে তাদৃশ কথিত লক্ষ্মণাক্রান্ত বীরপুরুষের অন্বেষণে প্রেরণ করিলেন। চরবৃন্দ বহু অনুসন্ধানের পর, বিহার-বিজয়ী মোহাম্মদ বখতিয়ারকে তৎলক্ষণ বিশিষ্ট দেখিতে পাইয়া সত্ত্বর রাজা লক্ষ্মণোয়কে অবগত করাইল। রাজ্যমধ্যে এই সংবাদ প্রচারিত হইলে, পণ্ডিতকুল এবং প্রধানবর্গের মধ্যে এক বিষম ভীতিসন্ধুল মহাহুলস্থল নড়িয়া গেল। সভাসদ ব্ৰাহ্মণগণ অতীব সত্ত্বরতা-সহকারে জন্মভূমি পরিহার পূর্বক, স্ব স্ব ধন-সম্পত্তি এবং পরিবার-পরিজন লইয়া কামরূপ, জগন্নাথ ও পূর্ববঙ্গের দূরবতী স্থানসমূহে আশ্রয় গ্ৰহণ করিলেন। কিন্তু বৃদ্ধ রাজা লক্ষ্মণেীয়, দিগন্ত-বিস্তৃত সমৃদ্ধিশালী পৈতৃক-রাজ্য এবং প্ৰিয়তম জলাভূমির মমতা পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করিতে সম্মত হইলেন না। তিনি স্বীয় অদৃষ্ট্রের উপর নির্ভর করিয়া, স্বকীয় দাস-দাসী, কতিপয় মাত্র নিম্নশ্রেণীর কর্মচারী এবং সৈনিকবৃন্দসহ Cজধানীতেই অবস্থিতি করিতে লাগিলেন। ইহােৱ কিয়দিন পরেই মহাসামন্ত বখতিয়ার, ৰিহাৱা প্রদেশের প্রান্তসীমা হইতে সপ্তদশ জন মাত্র অশ্বসাদী-সহ, বাঙ্গলাৱা ৱাজধানী নদীয়া অভিমুখে অশ্ব সঞ্চালিত করিলেন। বীৱবর বখতিয়ার এরূপ ভীষণ বিক্রম এবং ভীষণ বেগে বঙ্গরাজ্যে প্রবেশ করিয়াছিলেন যে, প্রান্তপাল সৈনিকবৃন্দ তাঁহার প্রতিযেণন
