পাতা:সিরাজী উপন্যাস সমগ্র.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জোরে টানিতেছে যে, বােধ হয় উভয়ের হৃদয় দুইটি শরীর ভেদ করিয়া এই মুহুর্তেই বাহির হইয়া আসিবে। সেনাপতি নিজের সঙ্কটজনক অবস্থা ভাবিয়া বীরের মত আত্মসংযম করিবার চেষ্টা করিলেন। অতি সামান্য নাশতা করিয়াই হাত ধুইতে উদ্যত হইলে, অরুণাবতী লজার বাঁধ ভাঙ্গিয়া রুদ্ধকণ্ঠে বলিল, “সে কি!” এই বলিয়া মাহতাব খাঁর হস্ত ধারণ করিয়া বলিল, “সব খেতে হবে।” যুবতীর স্নেহমাখা সুকোমল করম্পর্শে মাহতাব খাঁর সর্বাঙ্গে যেন কি এক অপার্থিব পুলক-প্রবাহ প্রবাহিত হইল। সর্বাঙ্গ রোমাঞ্চিত এবং হৃদয়ের প্রত্যেক বিন্দু সুধাধারায় সিক্ত হইল। মাহতাব খাঁ উচ্ছসিত কণ্ঠে ছলছল নেত্ৰে তাহার বিপদের কথা বর্ণনা করিলেন। শুনিয়া যুবতীর বুক অতি বিষম বেগে স্পন্দিত হইয়া থামিয়া গেল। যুবতী বাকশূন্য স্পন্দহীন মৃন্ময়ী প্রতিমার ন্যায় দণ্ডায়মান। অরুণাবতীর দুই চক্ষে অশ্রুর ঝরণা ছুটিল। প্ৰতাপ-কুমারীর ইচ্ছা হইতেছিল যে, সে একবার ছিন্ন লতিকার ন্যায় মাহতাব খাঁর চরণমূলে পতিত হইয়া দুই হন্তে তাহাকে আলিঙ্গন করিয়া প্ৰাণ ভরিয়া ক্ৰন্দন করে। কিন্তু লজ্জা আসিয়া তাহাতে বাধ সাধিল । যুবতী অবশেষে থর থর করিয়া কাপিতে লাগিল। পাছে বা পড়িয়া যায়। এই ভাবিয়া মাহতাব খ্যা দ্রুত উঠিয়া তাহাকে ধরিলেন। প্ৰিয়তমের উভয় বাহুস্পর্শে যুবতীর শরীরের প্রতি অণুপরমাণুতে যে প্রেমের তীব্ৰ উচ্ছাস হইল, তাহাতে যুবতী ক্ষণকালের জন্য আত্মসম্বরণে অসমর্থ হইয়া বিহবলা হইয়া পড়িল। মাহতাব খাঁ তাহাকে মূৰ্ছিত মনে করিয়া তাহার মস্তক নিজ ক্রোধে স্থাপনপূর্বক পাখা দ্বারা বাতাস করিতে লাগিলেন। খাঁ সাহেব মহাবিপদ গণিয়া দুৰ্গাবতীকে ব্যস্তকণ্ঠে ৩/৪ বার “রাণী মা! রাণী মা!” বলিয়া আহ্বান করিতেই রাণী অঞ্চলে চক্ষু মুছিয়া ত্বরিতপদে তথায় উপস্থিত হইলেন। চোখে-মুখে কয়েকবার শীতল জলের ঝাপটা দিলে অরুণাবতীর চেতনা হইল। সে আপনাকে তদবস্থায় দেখিয়া লজ্জায় সমস্ত বদনমণ্ডল আরক্ত করিয়া অবগুণ্ঠন টানিয়া দূরে সরিয়া বসিল। রাণী সমস্তই বুঝিতে পারিলেন। ইহা যে মূৰ্ছা নহে, নিদারুণ সকাম প্ৰেমাবেশ, তাহা বুঝিয়া কন্যার মানসিক অবস্থার শোচনীয়তা স্মরণে নিতান্তই ক্লিষ্ট ও ব্যথিত হইলেন। তিনি ভাবিলেন, পরস্পরের চুম্বনেই এ ঘটনা ঘটিয়াছে। ब्राणि जक्षिक श्य ८नदिशा शाश्ठाब थे। नूविजैीव्र निको निष्ठाख विनीठ ७ কাতরভাৰে বিদায় প্রার্থনা করিলেন। রাণী কিছুক্ষণ নিন্তব্ধ থাকিয়া দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “বাবা! আশীৰ্বাদ করি নিরাপদ দীর্ঘজীবন লাভ কর। এ রাক্ষসের রাজ্য ছেড়ে যাওয়াই ভাল। কিন্তু বাবা! আমার অরুণাবতীর কি উপায় হবে?” রাণী আর কিছু বলিতে পারিলেন না, কাঁদিতে লাগিলেন। মাহতাব খাৱ প্ৰাণেও অসীম বেদনা। সে স্থান ত্যাগ করিতে তাহার পা যেন অগ্রসর হইতেছিল না। তাহার হৃদয় ও চক্ষু সমস্তই অরুণাবতীতে ডুবিয়া মজিয়া গিয়েছিল । বছ। 8እስ