পাতা:সীতারাম- বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় খণ্ড—একবিংশতিতম পরিচ্ছেদ Şĝę ঐ । সময় আছে—আমার মরিবার সময় যথেষ্ট আছে। সী। তুমিই আমার মহিষী। ঐ রাজার পদধূলি গ্রহণ করিল। জয়ন্তী বলিল, “আমি ভিখারিণী, আশীৰ্ব্বাদ করিতেছি—আজ হইতে অনন্তকাল আপনারা উভয়ে জয়যুক্ত হইবেন।” সী। মা ! তোমার নিকট আমি বড় অপরাধী। তুমি যে আজ আমার দুর্দশ দেখিতে আসিয়াছ, তাহা মনে করি না, তোমার আশীৰ্ব্বাদেই বুঝিতেছি, তুমি যথার্থ দেবী। এখন আমায় বল, তোমার কাছে কি প্রায়শ্চিত্ত করিলে তুমি প্রসন্ন হও। ঐ শোন! মুসলমানের কামান ! আমি ঐ কামানের মুখে এখনই এই দেহ সমর্পণ করিব। কি করিলে তুমি প্রসন্ন হও, তা এই সময়ে বল। জয়ন্তী। আর একদিন তুমি একাই তুর্গ রক্ষা করিয়াছিলে। রাজা। আজ তাহ হয় না। জলে আর তটে অনেক প্রভেদ। পৃথিবীতে এমন মনুষ্য নাই, যে আজ এক দুর্গ রক্ষা করিতে পারে। জয়ন্তী। তোমার ত এখনও পঞ্চাশ জন সিপাহী আছে। - রাজা। ঐ কোলাহল শুনিতেছ? ঐ সেনা সকলের, এই পঞ্চাশ জনে কি করিবে ? : আমার আপনার প্রাণ আমি যখন ইচ্ছা, যেমন করিয়া ইচ্ছা, পরিত্যাগ করিতে পারি। কিন্তু বিনাপরাধে উহাদিগের হত্যা করি কেন ? পঞ্চাশ জন লইয়া এ যুদ্ধে মৃত্যু ভিন্ন অন্ত কোন ফল নাই । ঐ ! মহারাজ ! আমি বা নন্দ মরিতে প্রস্তুত আছি। কিন্তু নন্দ রমার কতকগুলি পুত্রকন্যা আছে, তাহাদের রক্ষার কিছু উপায় হয় না ? সীতারামের চক্ষুতে জলধারা ছুটিল। বলিলেন, “নিরুপায়! উপায় কি করিব ?” জয়ন্তী বলিল, “মহারাজ ! নিরুপায়ের এক উপায় আছে—আপনি কি তাহ জানেন না ? জানেন বৈ কি। জানিতেন, জানিয়া ঐশ্বৰ্য্যমদে ভুলিয়া গিয়াছিলেন—এখন কি সেই নিরুপায়ের উপায়, অগতির গতিকে মনে পড়ে না ?” - সীতারাম মুখ নত করিলেন। তখন অনেক দিনের পর, সেই নিরুপায়ের উপায়, অগতির গতিকে মনে পড়িল। কাল কাদম্বিনী বাতাসে উড়িয়া গেল—হৃদয়মধ্যে অল্পে অল্পে, ক্রমে ক্রমে, সূৰ্য্যরশ্মি বিকসিত হইতে লাগিল—চিন্তা করিতে করিতে অনন্তব্রহ্মাণ্ডপ্রকাশক সেই মহাজ্যোতিঃ প্রভাসিত হইল। তখন সীতারাম মনে মনে ডাকিতে লাগিলেন, పె