তোমার অন্বেষণ করিতে করিতে, পম্পাতীরে উপস্থিত হইলাম; দেখিলাম, প্রফুল্ল কমল সকল, মন্দ মারুত দ্বারা ঈষৎ আন্দোলিত হইয়া, সরোবরের নিরতিশয় শোভাসম্পাদন করিতেছে; উহাদের সৌরভে চতুর্দিক্ আমোদিত হইয়া রহিয়াছে; মধুকরেরা, মধুপানে মত্ত হইয়া, গুন্ গুন্ স্বরে গান করিয়া, উড়িয়া বেড়াইতেছে; হংস, সারস প্রভৃতি বহুবিধ বারিবিহঙ্গগণ, মনের আনন্দে, নির্মল সলিলে কেলি করিতেছে। তৎকালে, আমার নয়নযুগল হইতে অবিশ্রান্ত অশ্রুধারা বিনির্গত হইতেছিল; সুতরাং সরোবরের শোভার সম্যক অনুভব করিতে পারি নাই; এক ধারা নির্গত ও অপর ধারা উদগত হইবার মধ্যে, মুহূর্ত্ত মাত্র নয়নের যে অবকাশ পাইয়াছিলাম, তাহাতেই কেবল এক এক বার অস্পষ্ট অবলোকন করিয়াছিলাম।
সীতা, চিত্রপটের আর এক অংশে দৃষ্টিযোজনা করিয়া, লক্ষ্মণকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বৎস, ঐ যে পর্ব্বতে কুসুমিত কদম্বতরুর শাখায় ময়ুরময়ুরীগণ নৃত্য করিতেছে, আর শীর্ণকলেবর আর্য্যপুত্র তরুতলে মুর্চ্ছিত হইয়া পড়িতেছেন, তুমি গলদ নয়নে উঁহারে ধরিয়া রহিয়াছ, উহার নাম কি? লক্ষ্মণ বলিলেন, আর্য্যে, ঐ পর্ব্বতের নাম মাল্যবান্। মাল্যবান্ বর্ষাকালে অতি রমণীয় স্থান; দেখুন, সব জলধৱমণ্ডলের সহযোগে, শিখরদেশে কি অনির্বচনীয়