পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।

লক্ষ্মণ নিষ্ক্রান্ত হইলে পর, রাম ও সীতা, বিশ্রামভবনে প্রবেশ করিয়া, অসঙ্কুচিত ভাবে, অশেষবিধ কথোপকথন করিতে লাগিলেন। কিয়ৎ ক্ষণ পরে, সীতার নিদ্রাকর্ষণের উপক্রম হইল। তখন রাম বলিলেন, প্রিয়ে, যদি ক্লান্তিবোধ হইয়া থাকে, আমার গলদেশে ভুজলতা অর্পিত করিয়া, ক্ষণকাল বিশ্রাম কর। সীতা, কোমল বাহুল্লী দ্বারা, রামের গলদেশ অবলম্বন করিলে, তিনি অনির্বচনীয় স্পর্শসুখের অনুভব করিয়া বলিতে লাগিলেন, প্রিয়ে, তোমার বাহুলতার স্পর্শে আমার সর্ব্ব শরীরে যেন অমৃতধারার বর্ষণ হইতেছে, ইন্দ্রিয় -সকল অভূতপূর্ব্ব রসাবেশে অবশ হইয়া আসিতেছে, চেতনা।: বিলুপ্তপ্রায় হইতেছে; অকস্মাৎ আমার নিদ্রাবেশ, কি মোহাবেশ, উপস্থিত হইল, কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। সীতা, রামমুখবিনিঃসৃত অমৃতায়মান বচনপরম্পরা শ্রবণগোচর করিয়া, হাস্যমুখে বলিলেন, নাথ, আপনি চিরানুকূল ও স্থিরপ্রসাদ। যাহা শুনিলাম, ইহা অপেক্ষা, স্ত্রীলোকের পক্ষে, আর কি সৌভাগ্যের বিষয় হইতে পারে! প্রার্থনা এই, যেন চির দিন এইরূপ স্নেহ ও অনুগ্রহ থাকে।