পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২১

 সীতার মৃদু মধুর মোহন বাক্য কর্ণগোচর করিয়া, রাম বলিলেন, প্রিয়ে, তোমার কথা শুনিলে, শরীর শীতল হয়, কর্ণকুহর অমৃতরসে অভিষিক্ত হয়, ইন্দ্রিয় সকল বিমোহিত হয়, অন্তঃকরণের সজীবতা সম্পাদিত হয়। সীতা লজ্জিত হইয়া বলিলেন, নাথ, এই নিমিত্তই সকলে আপনাকে প্রিয়ংবদ বলে। যাহা হউক, অবশেষে এ অভাগিনীর যে। এত সৌভাগ্য ঘটিবে, ইহা স্বপ্নের অগোচর। এই বলিয়া, সীতা শয়নের নিমিত্ত উৎসুক হইলে, রাম বলিলেন, প্রিয়ে, এখানে অন্যবিধ শষ্যার সঙ্গতি নাই; অতএব, যে অনন্যসাধারণ রামবাহু, বিবাহসময় অবধি, কি গৃহে, কি বনে, কি শৈশবে, কি যৌবনে, উপধানস্থানীয় হইয়া আসিয়াছে, আজও সেই তোমার উপধানকার্য্য সম্পন্ন করুক। এই বলিয়া, রাম বাহু প্রসারিত করিলেন; সীতা, তদুপরি মস্তক বিন্যস্ত করিয়া, তৎক্ষণাৎ নিদ্রাগত হইলেন।

 রাম, স্নেহভরে কিয়ৎ ক্ষণ সীতার মুখনিরীক্ষণ করিয়া, প্রীতিপ্রফুল্ল নয়নে বলিতে লাগিলেন, কি চমৎকার। যখনই প্রিয়ার বদনসুধাকরে, দৃষ্টিপাত করি, তখনই আমার চিত্তচকোর চরিতার্থ ও অন্তরাত্মা অনির্বচনীয় আনন্দবসে আপ্লুত হয়। ফলতঃ, ইনি গৃহের লক্ষীস্বরূপা, নয়নের রসাঞ্জনরূপিণী; ইহার স্পর্শ চন্দনরসে অভিষেকস্বরূপ; বাহুলতা; কণ্ঠদেশে বিনিবেশিত হইলে, শীতল মসৃণ মৌক্তিক হারের