পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৩

গণের অভিপ্রায় অবগত হইবার নিমিত্ত, তাহাকে নিয়োজিত করিয়াছিলেন। সে, প্রতিদিন, প্রচ্ছন্ন ভাবে, ঐ বিষয়ের অনুসন্ধান করিত, এবং যে দিন যাহা জানিতে পারি, রামের গোচর করিয়া যাইত। এক্ষণে উহাকে সমাগত শুনিয়া, রাম প্রতীহারীকে বলিলেন, হরায় উহারে আমার নিকটে আসিতে বল। দুর্মুখ আসিয়া, প্রণাম করিয়া, কৃতাঞ্জলিপুটে সম্মুখে দণ্ডায়মান হইল। রাম, তাহার দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, কি হে দুর্মুখ, আজ কি জানিতে পারিয়াছ, বল? দুর্মুখ বলিল, মহারাজ, কি পৌরগণ, কি জনপদগণ, সকলেই বলে, আমরা রামরাজ্যে পরম সুখে আছি।

 এই কথা শুনিয়া, রাম বলিলেন, তুমি প্রতিদিনই প্রশংসা বাদের সংবাদ দিয়া থাক; যদি কেহ কোনও দোষকীর্ত্তন করিয়া থাকে, বল, তাহা হইলে প্রতিবিধানে যত্নবান্‌ হই; আমি, স্তুতিবাদশ্রবণবাসনায় তোমায় অনুসন্ধান করিতে পাঠাই নাই। দুর্মুখ, অন্য অন্য দিন, স্তুতিবাদ মাত্র শুনিয়া আসিত, সুতরাং, যাহা শুনিত, তাহাই অকপটে রামের নিকটে জানাইত। সে দিবস, সীতাসংক্রান্ত দোষকীর্ত্তন শুনিয়া, অপ্রিয়সংবাদপ্রদান অনুচিত, এই বিবেচনায়, গোপন করিয়া রাখিয়াছিল। এক্ষণে, রাম দোষকীর্ত্তনকথার উল্লেখ করিবামাত্র, সে চকিত ও হতবুদ্ধি হইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ,