পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
সীতার বনবাস।

কার্য্য করে। কি আশ্চর্য্য! প্রিয়ায় সকলই অলৌকিক প্রীতিপ্রদ। রাম মনে মনে এইরূপ আলোচনা করিতেছেন, এমন সময়ে সীতা, নিদ্রাবেশে বলিয়া উঠিলেন; হা নাথ, কোথায় রহিলে।

 সীতার স্বপ্নভাষিত শ্রবণগোচর করিয়া, রাম বলিতে লাগিলেন, কি চমৎকার! চিত্রদর্শনে, প্রিয়ার অন্তঃকরণে যে অতীত বিরহভাবনার আবির্ভাব হইয়াছিল, তাহাই, স্বপ্নে অস্তিত্বপরিগ্রহ করিয়া, যাতনাপ্রদান করিতেছে। এই বলিয়া, সীতার গাত্রে হস্তাবর্ত্তন করিতে করিতে, রাম, প্রেমভরে প্রফুল্লকলেবর হইয়া, বলিতে লাগিলেন, আহা! অকৃত্রিম প্রেম কি পরম পদার্থ! কি সুখ, কি দুঃখ, কি সম্পত্তি, কি বিপত্তি, কি যৌবন, কি বার্দ্ধক্য, সকল অবস্থাতেই একরূপ ও অবিকৃত। ঈদৃশ প্রণয়সুখের অধিকারী হওয়া অল্প সৌভাগ্যের কথা নহে। কিন্তু আক্ষেপের বিষয় এই, এরূপ প্রণয় জগতে নিতান্ত বিরল ও একান্ত দুর্লভ; যদি এত বিরল ও এত দুর্লভ না হইত, সংসারে সুখের সীমা থাকিত না।

 রামের বাক্য সমাপ্ত না হইতেই, প্রতীহারী, সম্মুখে আসিয়া, কৃতাঞ্জলিপুটে নিবেদন করিল, মহারাজ, দুর্মুখ দ্বারদেশে দণ্ডায়মান, কি আজ্ঞা হয়। দুর্মুখ অন্তঃপুরচারী অতি বিশ্বস্ত ভৃত্য। রাম, নূতন রাজ্যশাসন বিষয়ে প্রজা