পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৩৯

দেখ, প্রজালোকে, সীতা অসতী বলিয়া, সিদ্ধান্ত করিয়া রাখিয়াছে; তাহাদের অন্তঃকরণ হইতে সেই সিদ্ধান্ত অপসারিত করা কোনও মতে সস্তাবিত নহে। সুতরাং, সীতাকে গৃহে রাখিলে, তাহারা আমারে অসতীসংসর্গী বলিয়া ঘৃণা, করিবে। যাবজ্জীবন ঘৃণাস্পদ হওয়া অপেক্ষা প্রাণত্যাগ করা ভাল। আমি, প্রজারঞ্জনের অনুরোধে; প্রাণত্যাগে। পরায়ুখ নহি; তোমরা আমার প্রাণাধিক; যদি ঐ অনুরোধে তোমাদিগেরও সংসর্গপরিত্যাগ করিতে হয়, তাহাতেও কাতর নহি; সে বিবেচনায়, সীতাপরিত্যাগ তাদৃশ দুরূহ ব্যাপার নহে। অতএব, তোমরা যত বল না কেন, ও যত অন্যায় হউক না কেন, আমি, সীতাকে গৃহ হইতে বহিষ্কৃত করিয়া, কুলের কলঙ্কবিমোচন করিব, নিশ্চয় করিয়াছি। যদি তোমাদের আমার উপর দয়া ও স্নেহ থাকে, এ বিষয়ে আর আপত্তি উত্থাপিত করিও না। হয় সীতাপরিত্যাগ, নয় প্রাণপরিত্যাগ করিব, ইহার একতয় পক্ষ স্থির সিদ্ধান্ত জানিবে।

 এই বলিয়া, দীর্ঘনিশ্বাসপরিত্যাগ করিয়া, রাম কিয়ৎ ক্ষণ, অশ্রুপূর্ণ নয়নে, অবনত বদনে, মৌনাবলম্বন করিয়া রহিলেন; অনন্তর, লক্ষণকে বলিলেন, বৎস, অন্তঃকরণ হইতে সকল ক্ষোভ দূর করিয়া, আমার আদেশপ্রতিপালন কর। ইতঃপূর্ব্বেই, সীতা তপোবনদর্শনের অভিলাষ করিয়াছেন; সেই