পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
সীতার বনবাস।

করাতে, আমি কত প্রীতিলাভ করিয়াছি, বলিতে পারি। বোধ হয়, আমি জন্মান্তরে অনেক তপস্যা করিয়াছিলাম; সেই তপস্যার বলে, এমন অনুকূল পতি পাইয়াছি; আর্য্যপুত্রের মত অনুকূল পতি কখনও কাহারও ভাগ্যে ঘটে মাই আর্য্যপুত্রের স্নেহ, দয়া, ও মমতার কথা মনে হইলে, আমার সৌভাগ্যগর্ব্ব হইয়া থাকে। আমি দেবতাদের নিকট, কায়মনোবাক্যে, নিয়ত এই প্রার্থনা করিয়া থাকি, যদি পুনরায় নারীজন্ম হয়, যেন আর্য্যপুত্রকে পতি পাই। এই বলিয়া, সীতা প্রীতিপ্রফুল্ল ‘নয়নে বলিলেন, বৎস, বনবাসকালে, মুনিপত্নীদের সহিত আমার নিরতিশয়, প্রণয় হইয়াছিল; তাঁহাদিগকে দিবার নিমিত্ত, এই সমস্ত বিচিত্র বসন ও মহামূল্য আভরণ লইয়াছি।

 এই বলিয়া, সীতা সেই সমুদয় লক্ষ্মণকে দেখাইতেছেন; এমন সময়ে, প্রতিহারী আসিয়া সংবাদ দিল, সুমন্ত্র রথ প্রস্তুত করিয়া দ্বারদেশে আনিয়াছেন। সীতা, তপোবনদর্শনে যাইবার নিমিত্ত, এত উৎসুক হইয়াছিলেন যে, শ্রবণমাত্র, অতিমাত্র ব্যগ্র হইয়া, সমুদয় দ্রব্যসামগ্রী লইয়া, লক্ষ্মণ সমভিব্যাহারে, রথে আরোহণ করিলেন। অনধিক সময়েই, রথ, অযোধ্যা হইতে বিনির্গত হইয়া, জনপদে প্রবিষ্ট হইল। সীতা, নয়নের ও মনের প্রতিপদ প্রদেশ সকল প্রত্যক্ষ করিয়া, প্রীত মনে বলিতে লাগিলেন, বৎস লক্ষ্মণ, আমি