পাতা:সীতার বনবাস - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
সীতার বনবাস।

আমার মুখশোষ ও স্বরবৈলক্ষণ্য লক্ষিত করিয়াছেন; নতুবা বাস্তবিক তাহা নহে; উহা মনে করিয়া, আপনি বিরুদ্ধ ভাবনা উপস্থিত করিবেন না। যত ভাবিবেন, যত আন্দোলন করিবেন, ততই উৎকণ্ঠা ও অসুখ বাড়িবে।

 কিয়ৎ ক্ষণ পরেই, তাঁহাদের রথ গোমতীতীরে উপস্থিত হইল। সেই সময়ে, সকলভুবনপ্রকাশক ভগবান কমলিনীনায়ক অস্তগিরিশিখরে অধিরোহণ করিলেন। সায়ংসময়ে, গোমতীতীর পরম রমণীয় হইয়া উঠে। তৎকালে, তথায়, অতি অসুস্থচিত্ত ব্যক্তিও সুচিত্ত ও অনির্বচনীয় প্রীতি প্রাপ্ত হয়। সৌভাগ্যক্রমে, সীতারও উপস্থিত আন্তরিক অসুখের সম্পূর্ণ অপসারণ হইল। লক্ষ্মণ দেখিয়া সাতিশয় প্রীত ও প্রসন্ন হইলেন। তাহারা, সে রাত্রি, সেই স্থানে অবস্থিতি করিলেন। জানকী পথশ্রমে, বিশেষতঃ মনের উৎকণ্ঠায়, সাতিশয় ক্লান্ত হইয়াছিলেন। সুতরাং, ত্বরায় তাঁহার নিদ্রাকর্ষণ হইল। তিনি যত ক্ষণ জাগরিত ছিলেন। লক্ষ্মণ, সতর্ক হইয়া, তাঁহাকে নানা মনোহর কথায় এরূপ ব্যাপৃত রাখিয়াছিলেন যে, তিনি অন্য কোনও দিকে মনঃসংযোগ করিবার অবকাশ পান নাই। ফলতঃ, দিবাভাগে জানকীর যেরূপ অসুখসঞ্চার হইয়াছিল, রজনীতে তাহার আর কোনও লক্ষণ ছিল না।

 প্রভাত হইবামাত্র, তাঁহারা গোমতীতীর হইতে প্রস্থান