পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম অধ্যায় । ১১৯ যদি তাহাকে দেখিয়া থাক ত বল। করবীর, তুমি কৃশাঙ্গী জানকীর অতিশয় স্নেহের পাত্র, তিনি জীবিত আছেন কি না বল। তিলক, তুমি বৃক্ষপ্রধান, ভ্রমরের তোমার চতুর্দিকে গুঞ্জন করিতেছে, তুমি জানকীর বিশেষ আদরের বস্তু, তিনি কোথায় গিয়াছেন তাহ কি । অবগত আছ ? হে অশোক, শোকনাশক, আমি শোকভরে হতচেতন হইয়াছি, এক্ষণে তুমি জানকীকে দেখাইয়া আমার শোক নষ্ট কর । কণিকার, তুমি কুমুমিত হইয়া অত্যন্ত শোভিত হইতেছ, সুশীলা জানকী তোমাতে একান্ত অনুরক্ত, এক্ষণে তুমি যদি তাহাকে দেখিয়া থাক ত বল। হে মৃগ, তুমি মৃগনয়ন জানকীকে অবশুই জান, এক্ষণে জিজ্ঞাসা করি তিনি কি মৃগীগণের সহিত অরণ্যে বিচরণ করিতেছেন ? মাতঙ্গ, বোধ হয় আমার জানকী তোমার পরিচিত, এক্ষণে তুমি যদি তাহাকে দেখিয়া থাক ত বল।” (৩৬• ) রাম অরণ্যমধ্যে ভ্রান্ত ও উন্মত্তবৎ এইরূপে সকলকেই সীতার সংবাদ জিজ্ঞাসা করিলেন, কিন্তু কেহই তাহাকে কোন উত্তর প্রদান করিল না। সহসা তাহার বিষম ভ্রান্তি উপস্থিত হইল। তিনি মনে করিলেন যেন প্রিয়তমা জানকী একবার তাহার নয়নগোচর হইয়া পরিহাসচ্ছলে আবার বৃক্ষের অন্তরালে লুক্কায়িত হইতেছেন। তাই তিনি সেই মনঃকল্পিত সীতাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন “কমললোচনে, তুমি কি কারণে ধাবমান হইতেছ ? এই যে তোমায় দেখিতে পাইলাম! তুমি বৃক্ষের অন্তরাল হইতে কেন আমার বাক্যের উত্তর দিতেছ না ? একবার স্থির হও, এক্ষণে নিতান্তই নির্দয় হইয়াছ। তুমি ত পূৰ্ব্বে এইরূপ পরিহাস করিতে না, তবে কি জন্ত আমাকে উপেক্ষা করিতেছ ? প্রিয়ে, আমি তোমাকে , পীতবর্ণ পট্টবসনে চিনিয়াছি, তুমি ক্রতপদে যাইতেছ তাহাও দেখিয়াছি ; তোমার অন্তরে যদি স্নেহসঞ্চার থাকে, তবে থাম, আর যাইও না।