পাতা:সীতা (অবিনাশ চন্দ্র দাস).djvu/২০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্রয়োদশ অধ্যায় । ››ዓ এই কারণে নানাপ্রকার জল্পনা করে। তাহার রামকর্তৃক সীতার পুনগ্রহণসম্বন্ধে পরস্পরে এই রূপ কথোপকথন করিয়া থাকে “জানি না, রামের হৃদয়ে সীতাসহবাস কিরূপ প্রবল। রাবণ সীতাকে বলপূর্বক অপহরণ করে এবং লঙ্কায় গিয় তাহাকে অশোককাননে রক্ষা করে। সীতা রাক্ষসদিগের বশীভূত ছিলেন ; জানি না রাম কেন তাহাকে ঘৃণার চক্ষে দেখিলেন না । রাজার যেরূপ আচরণ, প্রজারাও তাহার অনুকরণ করিয়া থাকে ; অতঃপর স্ত্রীর এইরূপ ব্যতিক্রম ঘটিলে আমরাও সহিয়া থাকিব।” ( ৭৪৩) - রামের মস্তকে সহসা অশনিপাত হইল। সীতাসম্বন্ধে লোকের এইরূপ বিশ্বাস দেখিয় তিনি অতিশয় সস্তপ্ত হইলেন। তিনি সুহৃদগণকে বিসর্জন করিয়৷ তৎক্ষণাৎ ভরত ও লক্ষ্মণকে সমীপে আনয়ন করিতে ভূত্যের প্রতি আদেশ করিলেন। রাম আপনাকে অতিশয় মন্দভাগ্য মনে করিয়া অবিরলধারায় অশ্রুমোচন করিতে লাগিলেন। বিশুদ্ধস্বাভাবা জানকীর পবিত্র চরিত্র তিনি অবগত আছেন, কিন্তু অল্পবুদ্ধি প্রজাগণ র্তাহার মহত্ব বুঝিতে অক্ষম হইয়া তাহার নিষ্কলঙ্ক চরিত্রে দুরপণেয় কলঙ্ক আরোপণ করিতেছে! হায়, এই কলঙ্ক ক্ষালিত হইবে কিরূপে ? রামের চক্ষে সমগ্র সংসার অন্ধকারময় বোধ হইল । ইহজীবনে রামের আর সুখ নাই । রামচন্দ্র কুক্ষণেই প্রজাপালনরূপ কঠোর ব্ৰত আলিঙ্গন করিয়াছিলেন। রাজ্যের অধীশ্বর হইয়। যথাযোগ্যরূপে প্রজাপালন করিতে হইলে পতিপ্রাণ নিরপরাধিনী সীতাকে পরিত্যাগ করা ভিন্ন আর কি উপায় বিদ্যমান আছে ? কিন্তু রাম কোন প্রাণেই বা সেই শুদ্ধচারিণী পত্যমুরাগিণী সাধ্বী সীতাকে বিসর্জন করিবেন ? রাম ষে সেই স্নেহের প্রতিমা প্রিয়তমা জানকীকে নিৰ্ব্বাসিত করিয়া মুহূৰ্ত্তকালও জীবিত থাকিবেন না! হায়, রামের মৃত্যু হইল না কেন ? জানকীরে বিসর্জন করিয়া রাম কোন মুখে