বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সুকুমার রায় রচনাবলী-প্রথম খণ্ড.djvu/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বোকা বুড়ি

 এক ছিল বুড়ো আর এক ছিল বুড়ি। তারা ভারি গরিব। আর বুড়ি বেজায় বোকা আর ভয়ানক বেশি কথা বলে—যেখানে সেখানে যার তার সঙ্গে গল্প জুড়ে দেয়—তার পেটে কোন কথা থাকে না।

 বুড়ো একদিন তার জমি চষতে চষতে মাটির নীচে এক কলসি পেলে, সেই কলসি ভরা টাকা আর মোহর! তখন তার ভারি ভাবনা হল—এ টাকা যদি ফেলে রাখি কোন্‌দিন কে চুরি ক’রে নেবে। আর যদি টাকা বাড়ি নিয়ে যাই, বুড়ি টের পেয়ে যাবে—সে সকলের কাছে তার গল্প করবে; ক্রমে কথা রাষ্ট্র হয়ে পড়লে রাজার কোটাল এসে সব কেড়েকুড়ে নিয়ে যাবে। ভেবে ভেবে সে এক ফন্দি আঁট্‌ল। সে ঠিক করল যে বুড়িকে সব কথা বলবে কিন্তু এরকম উপায় করবে যাতে বুড়ির কথা কেউ না বিশ্বাস করে।

 তখন সে একটা মাছ কিনে এনে তার ক্ষেতের ধারে একটা গাছের উপর বেঁধে রাখল, আর একটা খরগোস এনে নদীর ধারে একটা গর্তের মধ্যে জাল দিয়ে জড়িয়ে রাখল। তারপর সে তার স্ত্রীকে গিয়ে বলল, “একটা ভারি আশ্চর্য খবর শনলাম— গাছের ডালে নাকি মাছ উড়ে বসে আর খরগোস নাকি জলে খেলা করে। আমাদের গণকঠাকুর বলেন—

‘মৎস্য বসেন গাছে
জলে খরগোস নাচে
গুপ্ত রতন খুঁজলে পাবে খুঁড়লে তারি কাছে’।”

দেশ-বিদেশের গল্প
১৩৯