পুরুষ রাখাল তার ভাঙ্গা হারটা দোকানে বেচাতে যাবে এ চিন্তা কি অসহ্য ঠেকেছে বাসন্তীর ? জমানে টাকা সোণা করতে চায়। এসব কি তার বানানো কথা ? আসলে তার অবস্থা দেখে বিচলিত হয়ে সে ব্যবস্থা করতে চায় যে পুরুষ এবং স্বামী রাখালের বদলে সে যাতে হারটা নিজেই বেচিতে পারে, নগদ টাকাটা যাতে সে-ই হাতে পায় ? অথবা এ সমস্ত তারই উদ্ভট কল্পনা ? জানাল দিয়ে দেখা যায় পাড়ার ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে । ছেলেরা একলা অথবা দু’তিন জনে একসাথে, মেয়েরা আট দশজনে দল বেঁধে । সেও এমনিভাবে স্কুলে যেত, বেশীদিনের কথা নয়। তখনও টের পেত বাপের তার অভাবের সংসার। ওই ছেলেমেয়েরাও কি টের পায় আজকের সংসারের ভয়াবহ। অভাব-দু’চার জন ছাড়া ? কোন মন্ত্রে বয়স কমে গিয়ে একবার যদি সে ভিড়ে পড়তে পারত ওদের দলে। ! নিদারুণ অস্থিরতা জাগে সাধনার, একটু ছটফট করে বেড়াবার যায়গা পৰ্য্যন্ত তার নেই। এই একখানা ঘরে সে একা । তার কােজ নেই, বেঁচে থাকার মানে নেই। এক পোয়া দুধ জ্বাল দিয়ে আর এক মুঠে ডাল সিদ্ধ করে উনানটাকে নিভতে দিয়ে তার শুধু প্ৰতীক্ষা করে থাকা যে কতক্ষণে দু'টি চাল আসবে শাকপাত আসবে, আবার উনান ধরিয়ে ভাত তরকারী রাধবার সুযোগ পাবে। বাক্স খুলে সাধনা ভাঙ্গা হারটা বার করে। । খোকা 8 ዓ
পাতা:সোনার চেয়ে দামী (প্রথম খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৭
অবয়ব