পাতা:স্ত্রীস্বাধীনতা ও স্ত্রীশিক্ষা.pdf/২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(১৭)

হইবে না। কোন পুস্তকে চিনির গুণ বর্ণিত থাকিলে তৎপাঠে যেমন চিনির মিষ্টতা বোধ হয় না, এবং চিনির আস্বাদন পাইতে হইলে যেমন চিনি খাইতে হয়, তেমনি পুস্তক বা পুঁথিতে চিনিস্বরূপ ব্রহ্মের গুণপাঠ করিয়া তৃপ্তিরূপ রসাস্বাদন করিতে পারা যায় না, তৃপ্তিরূপ শান্তি হইতে দূরে থাকিতে হয়। একারণ, পূর্ব্বে বালকদিগকে গুরুগৃহে পাঠান হইত। তথায় বালকগণ গুরূপদেশে কার্য্য করিয়া এবং গুরুজনের কার্য্য দেখিয়া শিক্ষালাভ করিত। শিক্ষা সংস্কারগত না হইলে প্রকৃত জ্ঞান হয় না। নিজে কর্ম্ম না করিলে সংস্কার হয় না এবং কর্ম্ম না করিলে কর্ম্মের মর্ম্ম বুঝা যায় না। কেবল কথায় জ্ঞানের পরিপক্কাবস্থা লাভ হয় না। জ্ঞান কার্য্যের দ্বারা না হইলে তৃপ্তিরূপ শান্তিলাভ হয় না। ভোজন না করিয়া কেবল ভোজন ভোজন এই শব্দ করিলে যেমন ভোজনের তৃপ্তি হয় না বা পেট ভরে না, বরং কেবল বকিয়া মুখ তিক্ত হইয়া ক্লেশকর হয়, তদ্রূপ বিনা কর্ম্মে কখন শিক্ষার সম্পূর্ণতা লাভ হয় না। উপস্থিত কালের শিক্ষায় শান্তি নাই বলিলেও অত্যুক্তি হয় না। শান্তি হইবে কোথা হইতে? যাহার মূল কুশিক্ষা, যাহা বাল্যকাল হইতে অভ্যস্ত হওয়ায় সংস্কারগত হইয়াছে, তাহা কি আর কেবল কথায় দূর হইতে পারে? কথায় দূর হইবে কোথা হইতে? যাঁহারা কথায় উপদেশ দিতেছেন, তাঁহাদের নিজের আচার ব্যবহার ও কার্য্য দেখিয়া তাঁহাদের কথায় আর বিশ্বাস বা শ্রদ্ধা থাকে না; সুতরাং কুকার্য্যে প্রবৃত্তি জন্মে। পিতামাতার উপর বালকবালিকাগণের যত বিশ্বাস এত আর কাহারও উপর হইতে পারে না। তাহারা