পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ত কেবল অপক্ষপাত কৌতূহল মাত্রই নয়, কাৰ্য্য-কারণের সত্যকার সম্বন্ধ বিচার। চার এবং চারে আট হয়, এবং আট হইতে চার বাদ দিলে চার থাকে ইহাই বিজ্ঞান। এ মনোভাবকে ভয় কিসের ? কিন্তু তাই বলিয়া নোঙরামী যে সাহিত্যের অন্তর্গত নয় একথা আমি পূৰ্ব্বেই বলিয়াছি। বিজ্ঞান হইলেও নয়, অবিজ্ঞান হইলেও নয়, সত্য হইলেও নয়, মিথ্যা হইলেও নয়। গল্পের ছলে ধাত্রী-বিদ্যা শিখানোকেও আমি সাহিত্য বলি না, উপন্যাসের আকারে কামশাস্ত্র প্রচারকেও আমি সাহিত্য বলি না। বোধ হয় বাঙ্গলাদেশের একজনও অতি-আধুনিক সাহিত্য-সেবী একথা বলে না। বিজ্ঞানকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করিয়া ধৰ্ম্মপুস্তক রচনা করা যায়, আধ্যাত্মিক কবিতা রচনা করা যায়, রূপকথা-সাহিত্যও রচনা করা না যায় তাহা নহে, কিন্তু উপন্যাস-সাহিত্যের ইহা শ্রেষ্ঠ পন্থা নহে । রাজার পুত্র গেলেন চব্বিশ বছর বয়স এবং তেপান্তর মাঠের দ্বর্গম পথ পার হইয়। রাজকন্যার সন্ধানে। কোটলপুত্রের ডিটেকটিভ বুদ্ধি তাহার নাই, সওদাগর পুত্রের বেনেবুদ্ধি তাহার নাই, আছে শুধু রস। গিয়া বলিলেন, তুমি যে তুমি এই আমার যথেষ্ট। এই রস উপভোগ করিবার মত রসজ্ঞ ব্যক্তির সংসারে অভাব নাই তাহা মানি, কিন্তু ভিন্ন রুচির লোকও ত সংসারে আছে ? তাহার। গিয়া যদি বলে, রাজপুত্র, তোমার মনের মধ্যে রাজকন্যার রূপ-যৌবন স্থান পায় নাই, যৌতুক স্বরূপ অৰ্দ্ধেক রাজত্বের প্রতিও তোমার কিছুমাত্র খেয়াল নাই, তুমি মহৎ,− কন্যাটি যে ঘুটে-কুড়োনির কন্যা নয়, রাজার কন্য, ইহাই তোমার যথেষ্ট,—মনস্তত্ত্বের অবতারণায় প্রয়োজন নাই, কিন্তু রাজপুত্র ! তোমার মনের কথাটা আরও একটু খোলসা করিয়া না ১২০