পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের রীতি ও নীতি বলিলে ত এই উচ্চাঙ্গের রস-সাহিত্যের সমস্ত রসটুকু উপলব্ধি করিতে পারিতেছি না, তখন ইহাদেরই মুখেই বা হাত চাপা দিবে কে ? এই ধরণের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় স্বৰ্গীয় স্বরেন্দ্রমোহন ভট্টাচার্য্যের সাহিত্য রচনায়। পরলোকগত সাহিত্যিকের প্রতি আশ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য ইহার উল্লেখ করিতেছি না, করিতেছি হাতের কাছে একটা অবৈজ্ঞানিক মনোবৃত্তির অসম্ভব কল্পনার উদাহরণ পাইতেছি বলিয়া, বাঙ্গল দেশে তাহার পাঠক সংখ্যা বিরল নয়। আমি নিজে দেখিয়াছি মুদির দোকানে একজন গ্রন্থ পাঠ করিতেছে এবং বহুলোকে গলদশ্রলোচনে সেই সাহিত্যস্থধা পান করিতেছে। নিষ্ঠাবান সচ্চরিত্র দরিদ্র নায়ক মা কালীর কাছে স্বপ্নে আদেশ পাইয় সাত ঘড়া সোনার মোহর গাছতল হইতে খুড়িয়া বাহির করিয়া বড়লোক হইল। ছেলে মরিল কিন্তু ভয় নাই। শ্মশানে জটা-জুট-ধারী তেজঃপুঞ্জকলেবর এক সন্ন্যাসীর আকস্মিক আবির্ভাবে ছেলের চিতার উপরে বাবা’ বলিয়া উঠিয়া বসিল । রসজ্ঞ শ্রোতার দল কাদিয়া আকুল । তাহাদের আনন্দ রাখিবার স্থান নাই। সেখানে কেহই ঠেলা দিয়া প্রশ্ন করে না, কেন ? কিসের জন্য ? তাহারা বলে, দরিদ্র নায়ক বড়লোক হইয়াছে ইহাই ঢের। মর-ছেলে প্রাণ পাইয়াছে ইহাই আমাদের যথেষ্ট,— ইহাতেই আমাদের বোধের ক্ষুধা, আত্মার ক্ষুধ মেটে। ইহ। অনিৰ্ব্বচনীয়,—এই প্রকার সাহিত্য-রসেই আমাদের হৃদয়ের বসস্তলোকে কল্পলতায় ফুল ফুটে । কলহ করিবার কি আছে ? কিন্তু, আমি যদি এ কাজ না পারি, নিজের গ্রন্থের দরিদ্র নায়ককে মা কালীর অনুগ্রহ জোগাড় করিয়া দিতে সক্ষম ন হই, জটা-জুট-ধারী সন্ন্যাসীকে খুজিয়া না পাইয়া মরা-ছেলেকে >ペ>