পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য নেই। কল্পনায় স্পষ্ট দেখতে পেলাম সবাই ঘাড় নেড়ে স্মিতহাস্তে বলচেন, উনি আসবেন না তো ? এ আমরা জানতাম । সেই বাক্যবাণের ভয়েই আমি কোনমতে এসে উপস্থিত হয়েছি। এখন দেখুচি ভালই করেছি। এই না-আসতে পারার দুঃখ আমার আমরণ ঘূচত না। কিন্তু, যা লিখে আনবার ইচ্ছে ছিল, সে হয়ে ওঠেনি। একটা কারণ পূৰ্ব্বেই উল্লেখ করেচি, তার চেয়েও বড় কৈফিয়ৎ আছে । মানুষের অল্পস্বল্প পাওয়ার কথাই মনে থাকে, তাই লিখতে গিয়ে দেখলাম কবির কাছ থেকে পাওয়ার হিসেব দিতে যাওয়া বৃথা । দফাওয়ারি ফর্দ মেলে না। ছেলেবেলার কথা মনে আছে। পাড়াগায়ে মাছ ধ’রে ডোঙা ঠেলে, নৌকো বেয়ে দিন কাটে । বৈচিত্র্যের লোভে মাঝে মাঝে যাত্রার দলে সাক্রেদী করি, তার আনন্দ ও আরাম যখন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন গামছা-কাধে নিরুদ্দেশ যাত্রায় বার হই, ঠিক বিশ্বকবির কাব্যের নিরুদ্ধেশযাত্রা নয়, একটু আলাদা । সেটা শেষ হ’লে আবার একদিন ক্ষতবিক্ষত পায়ে, নিৰ্জ্জীব দেহে ঘরে ফিরে” আসি । আদর অভ্যর্থনার পালা শেষ হ’লে, অভিভাবকের পুনরায় বিদ্যালয়ে চালান করে দেন। সেখানে আর একদফা সম্বৰ্দ্ধনা লাভের পর, আবার বোধোদয়-পদ্যপাঠে মনোনিবেশ করি, আবার একদিন প্রতিজ্ঞ ভূলি, আবার দুষ্ট-সরস্বতী কাধে চাপে, আবার সাক্রেদী স্বরু করি, আবার নিরুদ্ধেশযাত্রা—আবার ফিরে আসা, আবার তেমনি আদর আপ্যায়ন সম্বৰ্দ্ধনার ঘট । এমনি বোধোদয়, পদ্যপাঠ ও বাঙ্গলা জীবনের এক অধ্যায় শেষ হ’ল। এলাম সহরে । একমাত্র বোধোদয়ের নজিরে গুরুজনের ভৰ্ত্তি করেছিলেন ছাত্ৰ-বৃত্তি ক্লাসে । S&૨