পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যে আর্ট ও দুনীতি যায় না, তাই নিন্দ ও কটুবাক্যের স্বত্রপাতও হয়েছে এইখানে r একটা দৃষ্টান্ত দিয়ে বলি। বিধবা-বিবাহ মন্দ, হিন্দুর ইহা মজ্জাগত সংস্কার। গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে বিধবা নায়িকার পুনর্বিবাহ দিয়া কোন সাহিত্যিকেরই সাধ্য নাই, নিষ্ঠাবান হিন্দুর চক্ষে সৌন্দর্ঘ্য স্থষ্টি করবার। পড়বা-মাত্রই মন তার তিক্ত বিষাক্ত হ’য়ে উঠবে। গ্রন্থের অন্যান্য সমস্ত গুণই তার কাছে ব্যর্থ হয়ে যাবে। স্বগীয় বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন গভর্ণমেণ্টের সাহায্যে বিধবা-বিবাহ বিধিবদ্ধ করেছিলেন, তখন তিনি কেবল শাস্ত্রীয় বিচারই করেছিলেন, হিন্দুর মনের বিচার করেননি। তাই আইন পাশ হ’ল বটে, কিন্তু হিন্দুসমাজ তাকে গ্রহণ করতে পারলে না । তার অতবড় চেষ্টা নিস্ফল হ’য়ে গেল । নিন্দ, গ্লানি, নিৰ্য্যাতন তাকে অনেক সইতে হয়েছিল, কিন্তু তখনকার দিনে কোন সাহিত্য-সেবীই তার পক্ষ অবলম্বন করলেন না। হয়ত, এই অভিনব ভাবের সঙ্গে তাদের সত্যই সহানুভূতি ছিল না, হয়ত, তাদের সামাজিক অপ্রিয়তার অত্যন্ত ভয় ছিল, যে জন্যই হউক্‌, সে দিনের সে ভাবধারা সেইখানেই রুদ্ধ হয়ে রইল—সমাজদেহের স্তরে স্তরে, গৃহস্থের অন্তঃপুরে সঞ্চারিত হ’তে পেলে না। কিন্তু এমন যদি না হ’ত, এমন উদাসীন হ’য়ে যদি তারা না থাকতেন, নিন্দা, গ্লানি, নিৰ্য্যাতন সকলই তাদিগকে সইতে হ’ত সত্য, কিন্তু আজ হয়ত আমরা হিন্দুর সামাজিক ব্যবস্থার আর একটা চেহারা দেখতে পেতাম । সে দিনের হিন্দুর চক্ষে যে সৌন্দৰ্য্য-স্থষ্টি কদৰ্য্য, নিষ্ঠুর ও মিথ্যা প্রতিভাত হ’ত, আজ অৰ্দ্ধ শতাব্দী পরে তারই রূপে হয়ত আমাদের নয়ন ও মন মুগ্ধ হ’য়ে যেত। এমনই ত হয়, সাহিত্য-সাধনায় নবীন সাহিত্যিকের এই ত সব চেয়ে বড় সাত্বন। সে জানে, আজকের brዓ