পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নূতন ও পুরাতন 〉? বললেও হয় ) আমরা পিতামাতা হতে প্রস্তুত আছি”, যদি আমাদের ছাত্রবৃন্দ বলে ‘সংযম আমাদের পক্ষে অসাধ্য, শরীরমনের সম্পূর্ণতা লাভের জন্য প্রতীক্ষা করতে আমরা নিতান্তই অসমর্থ, অকালে অপবিত্র দাম্পত্য আমাদের পক্ষে অত্যাবগুক এবং হি দুয়ানিরও সেই বিধান, আমরা চাই নে উন্নতি, চাই নে ঝঞ্চাট, অামাদের এই রকম ভাবেই বেশ চলে যাবে’– তবে নিরুত্তর হয়ে থাকতে হয় । কিন্তু এ কথাটুকু বলতেই হয় যে, হীনতাকে হীনতা বলে অনুভব করাও ভালো কিন্তু বুদ্ধিবলে নিজাবতাকে সাধুতা এবং অক্ষমতাকে সর্বশ্রেষ্ঠতা বলে প্রতিপন্ন করলে সদগতির পথ একেবারে আটেঘাটে বন্ধ করা হয় । সর্বাঙ্গীণ মনুষ্যত্বের প্রতি যদি আমাদের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস থাকে তা হলে এত কথা ওঠে না। তা হলে কৌশলসাধ্য ব্যাখ্যা দ্বারা আপনাকে ভুলিয়ে কতকগুলো সংকীর্ণ বাহ সংস্কারের মধ্যে আপনাকে বদ্ধ করার প্রবৃত্তিই হয় না। আমরা যখন একটা জাতির মতো জাতি ছিলুম তখন আমাদের যুদ্ধ বাণিজ্য শিল্প, দেশে বিদেশে গতায়াত, বিজাতীয়দের সঙ্গে বিবিধ বিদ্যার আদান-প্রদান, দিগ্বিজয়ী বল এবং বিচিত্র ঐশ্বর্য ছিল । আজ বহু বৎসর এবং বহু প্রভেদের ব্যবধান থেকে কালের সীমান্তদেশে আমরা সেই ভারতসভ্যতাকে পৃথিবী হতে অতিদূরবর্তী একটি তপঃপূত হোমধুমরচিত অলৌকিক সমাধিরাজ্যের মতো দেখতে পাই, এবং আমাদের এই বর্তমান স্নিগ্ধচ্ছায়া কর্মহীন নিদ্রালস নিস্তব্ধ পল্লীটির সঙ্গে তার কতকটা ঐক্য অনুভব করে থাকি— কিন্তু সেটা কখনোই প্রকৃত নয় । আমরা যে কল্পনা করি, অামাদের কেবল আধ্যাত্মিক সভ্যতা ছিল, আমাদের উপবাসক্ষীণ পূর্বপুরুষেরা প্রত্যেকে একলা বসে বসে আপন আপন জীবাত্মাটি হাতে নিয়ে কেবলই শান দিতেন, তাকে একেবারে কর্মাতীত অতিস্থঙ্ক জ্যোতির রেখাটুকু করে তোলবার চেষ্টা— সেট