পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেশীয় রাজ্য (t X দেশ উন্নতিলাভের উপায় নির্ধারণ করিবে, ইহাই আমাদের কামনা । ইহার কারণ এ নয় যে, ভারতের সভ্যতাই সকল সভ্যতার শ্রেষ্ঠ । যুরোপের সভ্যতা মানবজাতিকে যে সম্পত্তি দিতেছে তাহা যে মহামূল্য এ সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করা ধৃষ্টতা । অতএব যুরোপীয় সভ্যতাকে নিকৃষ্ট বলিয়া বর্জন করিতে হইবে এ কথা অামার বক্তব্য নহে, তাহা অামাদের পক্ষে অস্বাভাবিক বলিয়াই, অসাধ্য বলিয়াই স্বদেশী অাদশের প্রতি আমাদের মন দিতে হইবে । উভয় আদশের তুলনা করিয়া বিবাদ করিতে আমার প্রবৃত্তি নাই, তবে এ কথা বলিতেই হইবে যে উভয় অদশই মানবের পক্ষে অত্যাবশু্যক । সেদিন এখানকার কোনো ভদ্রলোক অামাকে জিজ্ঞাসা করিতেছিলেন যে, গবর্মেন্ট আর্ট, স্কুলের গ্যালারি হইতে বিলাতি ছবি বিক্রয় করিয়া ফেলা কি ভালো হইয়াছে ? আমি তাহাতে উত্তর করিয়াছিলাম যে, ভালোই হইয়াছে। তাহার কারণ এ নয় যে, বিলাতি চিত্রকলা উৎকৃষ্ট সামগ্ৰী নহে। কিন্তু সেই চিত্রকলাকে এত সস্তায় অtয়ত্ত করা চলে না। আমাদের দেশে সেই চিত্রকলার যথার্থ আদর্শ পাইব কোথায় ? দুটো লক্ষেীঠংরি ও *হিলিমিলি পনিয়া’ শুনিয়া যদি কোনো বিলাতবাসী ইংরেজ ভারতীয় সংগীতবিদ্যা আয়ত্ত করিতে ইচ্ছা করে, তবে বন্ধুর কর্তব্য তাহাকে নিরস্ত করা । বিলাতি বাজারের কতকগুলি সুলভ আবর্জন এবং সেইসঙ্গে দুটি-একটি ভালো ছবি চোখের সামনে রাখিয়া আমরা চিত্রবিদ্যার যথার্থ আদর্শ কেমন করিয়া পাইব ? এই উপায়ে আমরা যেটুকু শিখি তাহা যে কত নিকৃষ্ট, তাহাও ঠিকমত বুঝিবার উপায় আমাদের দেশে নাই । যেখানে একটা জিনিসের আগাগোড়া নাই, কেবল কতকগুলো খাপছাড়া দৃষ্টাস্ত আছে মাত্র, সেখানে সে জিনিসের পরিচয়-লাভের চেষ্টা করা বিড়ম্বনা। এই অসম্পূর্ণ শিক্ষায় আমাদের দৃষ্টি নষ্ট করিয়া