পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সভ্যতা جولا যুরোপীয় সভ্যতা এইরূপে চিরন্তন সত্যের পথ পাইয়াছে ; তাহা জগদীশ্বরের কার্যপ্রণালীর ধারা গ্রহণ করিয়াছে, ঈশ্বর যে পথ নির্মাণ করিয়াছেন এ সভ্যতা সেই পথে অগ্রসর হইতেছে । এ সভ্যতার শ্রেষ্ঠতাতত্ত্ব এই সত্যের উপরেই নির্ভর করে । গিজের মত আমরা উদদ্ভূত করিয়া দিলাম। যুরোপীয় সভ্যতা এক্ষণে বিপুলায়তন ধারণ করিয়াছে, তাহাতে সন্দেহ নাই। যুরোপ আমেরিক অষ্ট্রেলিয়া, তিন মহাদেশ এই সভ্যতাকে বহন পোষণ করিতেছে । এত ভিন্ন ভিন্ন বহুসংখ্যক দেশের উপরে এক মহাসভ্যতার প্রতিষ্ঠা, পৃথিবীতে এমন আশ্চর্য বৃহদব্যাপার ইতিপূর্বে আর ঘটে নাই। সুতরাং কিসের সঙ্গে তুলনা করিয়া ইহার বিচার করিব ? কোন ইতিহাসের সাক্ষ্য গ্রহণ করিয়া ইহার পরিণাম নির্ণয় করিব ? অন্য সকল সভ্যতাই এক দেশের সভ্যতা, এক জাতির সভ্যতা । সেই জাতি যত দিন ইন্ধন জোগাইয়াছে তত দিন তাহা জলিয়াছে, তাহার পরে তাহ নিবিয়া গেছে অথবা ভস্মাচ্ছন্ন হইয়াছে। যুরোপীয় সভ্যতা-হোমানলের সমিধু কাষ্ঠ জোগাইবার ভার লইয়াছে নানা দেশ, নানা জাতি। অতএব এই যজ্ঞহুতাশন কি নিবিবে, না ব্যাপ্ত হইয়া সমস্ত পৃথিবীকে গ্রাস করিবে ? কিন্তু, এই সভ্যতার মধ্যেও একটি কর্তৃভাব আছে ; কোনো সভ্যতাই আকারপ্রকারহীন হইতে পারে না । ইহার সমস্ত অবয়বকে চালনা করিতেছে এমন একটি বিশেষ শক্তি নিশ্চয়ই আছে। সেই শক্তির অভু্যদয় ও পরাভবের উপরেই এই সভ্যতার উন্নতি ও ধবংস নির্ভর করে । তাহা কী ? তাহার বহুবিচিত্র চেষ্টা ও স্বাতন্ত্র্যের মধ্যে ঐক্যতন্ত্র কোথায় ? যুরোপীয় সভ্যতাকে দেশে দেশে খণ্ড খণ্ড করিয়া দেখিলে অন্য সকল বিষয়েই তাহার স্বাতন্ত্র্য ও বৈচিত্র্য দেখা যায়, কেবল একটা বিষয়ে