পাতা:স্বদেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধর্মবোধের দৃষ্টান্ত অন্যত্র বলিয়াছি কোনো ইংরাজ অধ্যাপক এ দেশে জুরির বিচার সম্বন্ধে আলোচনাকালে বলিয়াছিলেন যে, যে দেশের অর্ধসভ্য লোক প্রাণের মাহাত্ম্য ( Sanctity of Life ) বোঝে না, তাহীদের হাতে জুরিবিচারের অধিকার দেওয়া অন্যায়। প্রাণের মাহাত্ম্য ইংরাজ আমাদের চেয়ে বেশি বোঝে সে কথা নাহয় স্বীকার করিয়াই লওয়া গেল। অতএব সেই ইংরাজ যখন প্রাণ হনন করে তখন তাহার অপরাধের গুরুত্ব আমাদের চেয়ে বেশি। অথচ দেখিতে পাই, দেশীয়কে হত্যা করিয়া কোনো ইংরাজ-খুনী ইংরাজ-জজ ও ইংরাজ-জুরির বিচারে ফাসি যায় নাই। প্রাণের মাহাত্ম্য সম্বন্ধে তাহাদের বোধশক্তি যে অত্যন্ত সূক্ষ্ম, ইংরাজ-অপরাধী হয়তো তাহার প্রমাণ পায়, কিন্তু সে প্রমাণ দেশীয় লোকদের কাছে কিছু অসম্পূর্ণ বলিয়াই ঠেকে। এইরূপ বিচার অামাদিগকে দুই দিক হইতে আঘাত করে। প্রাণ যা যাবার সে তো যায়ই, ও দিকে মানও নষ্ট হয় । ইহাতে আমাদের জাতির প্রতি যে অবজ্ঞা প্রকাশ পায় তাহা আমাদের সকলেরই গায়ে বাজে । ইংলণ্ডে ‘গ্লোব’ বলিয়া একটি সংবাদপত্র আছে, সেটা সেখানকার ভদ্রলোকেরই কাগজ, তাহাতে লিখিয়াছে : টমি অ্যাটকিন ( অর্থাৎ পণ্টনের গোরা ) দেশী লোককে মারিয়া ফেলিবে বলিয়া মারে না, কিন্তু মার খাইলেই দেশী লোকগুলা মরিয়া যায়– এইজন্য টমি বেচারার লঘুদণ্ড হইলেই দেশী খবরের কাগজগুলা চীৎকার করিয়া মরে । টমি অ্যাট্‌কিনের প্রতি দরদ খুব দেখিতেছি, কিন্তু স্যাঙ্কটিটি অফ লাইফ কোনখানে ! যে পাশব আঘাতে আমাদের পিলা ফাটে, এই