পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২৪ পূৰ্ব্বেষ্ট পত্তিস্তমঙ্গশয় তাহাকে এই অন্তরোধ করিলেন । কুন্দ পণ্ডিকের দিকে চাহিতে গিয়া সম্মুখের দেয়ালের আয়নাখানায় অগ্ৰে দুষ্টপাত কবিল,— মাথার শিথিল সাড়ীখtন। ঠিক কলিম লইবfব ছলে কপালের কেশদাম অলক্ষ্যে ঠিক কপিয়া লইয়া কহিল, -—“সেখানকার একজন বড় সাহেব—ন!ম করব নf. কলকাতায় যাবেন,—ট্রেণ ছড়িতে একটু দেরী ছিল, ষ্টেশনের থানাঘবে প’সে গেলাসেব উপর গেলাসে মদ ঢালছেন—আর পাচ্ছেন, ছ’ট ঘণ্ট। পড়ল, তবু তার হ’স নেই, তৃতীয় ঘণ্ট। পড়লো-—আমার ভীষ্ট উt’কে খবর দিলে যে এইবার গt ৬ী ছাড়বে। তাড়াতাড়ি উঠে তিনি গাড়ীর উদ্দেশে ছুটুলেন । তিনি তখন নেশায় চরচুরে । পথে ঢ় চারজন কুলী জনত ক’রে দাড়িয়েছিল, লপি-মেরে তাদের সরিয়ে পথ করে নিলেন পঞ্চায় এক জন লোক ঠিক গন্ডীয় সামনে প’ড়ে গেল, তিনি এমন জোরে জুতেfব ঘয়ে তাকে ঠেলে দিলেন যে, তার মাথা ফেটে রক্তারক্তি হ’য়ে উঠল,—সাহেব তাতে পক্ষেপ ন ক’রে গtউীতে গিয়ে উঠলেন ।” জ্যোন্তিৰ্ম্মী নিস্তব্ধ হইয়া শুনিল, তাহার চক্ষু জলপূর্ণ হইয়া উঠিল । গানিক পরে বলিল— “পণ্ডিতমশায় একটা কথা বলব ? অামার মনে চয়, খবরের কাগজে এ রকম দুৰ্ব্বল-পীড়নের কথা প’ডে আপনার আনন্দভোগ কবেন । আর জানেন, এষ্ট মনে ক’য়েই অীমাব বেণী কষ্ট হয় ।” “আনন্দভোগ করি ?” পণ্ডিতমহাশয়ের নয়ন বিষ্ফরিত হইয়া উঠিল । “নিশ্চয়ই । যেমন রাস্তায় মারামারি ভ’লে পথিকের মজা অশুভব করে, সেই রকম । নইলে ভাই-বোন, মা-বাপ লাঞ্ছিত হচ্ছে দেখলে বা শুনলে কেউ কি চুপ করে থাকতে পারে?” “কি করব বল ? উপায় কি ?” “কি করবেন ? প্রতিকারের চেষ্ট করুন ।”

  • প্রতিকারেল চেষ্টা ।” পণ্ডিতমহাশয় অবাকৃ হইয়া গেলেন । লম্ব! দী তীতে তাত বুলাইয়। উদ্ধে দৃষ্টিপাত করিয়া বলিলেন,--“ভগবান যদি ইচ্ছা করেন, তবেই প্রতিকার হবে । আমাদের মত দুৰ্ব্বল জীবের প্রতিকার-চেষ্টা, আর য,পকণ্ঠে কণ্ঠদান— একই কথা ।” -
  • প্রতিদিন জীবন্ত দগ্ধ যন্ত্রণ ভোগ করার চেয়ে যুপকাঠে কণ্ঠদানও আমি ভাল মনে করি।” পণ্ডিতমহাশয় অস স্থায় ব;হ কের মত কুন্দবালাম

স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী দিকে দৃষ্টিপাত করিয়া যেন নীরবে প্রশ্ন করিলেন,— "এ মেয়ে পাগলের মত বলে কি ?” জ্যোতিৰ্ম্মী বলিল-—“আপনি ত অামাকে পড়িয়েছেন—উস্কমেন হি সিপাস্তি কাৰ্য্যাণি ন মনেরগৈ । ইংরাজিতেও একটা প্রবাদ অাছে—নিজেকে যে সাহায্য কবে, ভগবান তার সঙ্গয় হন । জাতির মঙ্গল-চেষ্টা কর! ত আর বিদ্রোহিতা নয় যে, আপনি কঁপি যাবেন! আলগেমীর আরামর্টুকু ছাড়তে চান না ব'লেই এসব কাজে আপনার উদ্যমহীন । আমি থালোক হ'য়ে যে কাজ অসাধ্য-সাধন মনে করি না —আপনার পুরুষ হয়ে সে কাজে ভগবানের মুখ চেয়ে নিবৃত্ত থাকেন। ভগবান ত মানুষের দ্বারাই কাজ করিয়ে নেন।" পণ্ডিত মহাশয়ের বিস্ময় উত্তরোত্তর বাড়িতেছিল, তিনি মুগ্ধের মত কছিলেন,—“কি করতে বল তুমি ?” *সহরে, নগরে, গ্রামে, পল্লীতে, বিদ্যালয়ের সঙ্গে সঙ্গে যদি রীতিমত লায়াম শিক্ষা দে ওয়া হয়, তা হ'লে শারীরিক তেজের সঙ্গে সঙ্গে ছেলেদের যে মনের তেজও বাড়বে, তাতে সন্দেহ মাত্র নেই। তথন তাদের পীড়ন করতে কারে সাহসই হবে না।” কুন্দবালা বালল,—“এক সময় হিন্দু-মেলা নামে কলকাতায় একটা মেলা হয়েছিল,—তার উদ্যোগে দিনকতক নাকি ছেলেদের মধ্যে ব্যায়াম-চর্চার খুব ধূম প’ড়ে গিয়েছিল ।” পণ্ডিত মহাশয় বলিলেন– “হা, সে অনেক দিনের কথা,—আমরা তখন ছেলেমানুষ ” জ্যোতিৰ্ম্ময়ী প্রশ্ন করিল—“বন্ধ হোল কেন ?" কুন্দবালা উত্তর করিল-“আমাদের ত কার্যের উৎসাহ সূৰ্য্য-চন্দ্রের আলোক নয় যে, স্থায়ী হবে ; ভেলের বাতি আর কতক্ষণ জলে ?”

  • সংসারে ত তেলের বাতির প্রভাব কম নয় । স্বৰ্য্য চন্দ্রকে ধরে রাখা যায় না,—কিন্তু সহজেই আমরা প্রদীপে তেলের যোগান দিতে পারি। আমদের দেশের কবির, দেশনায়কর কি বহুদিন ধ’রে তাই করছেন না ? যখন পড়ি “তোমার তরে মা সপেছি দেহ, তোমার তরে ম স পেছি প্রাণ”— তখন আমার দেহ-প্রাণ নবশক্তিতে বলীয়ান হ’য়ে ওঠে,—যখন পড়ি —

“তুমি ক্ষুধাতৃষ্ণাতুর,—গৃহ ধনধান্তপুর অন্নজল তবু নাহি মেলে – তবু তারা খেলে।” তখন আর ছাসতে খেলতে ইচ্ছা করে না।"