পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8. বালকের মুর্ভূি-গঠন নিরীক্ষণ করে- সেইরূপ আনন্দে তাহার। মত্ত । প্রভেদের মধ্যে এ ক্ষেত্রে কেবলমাত্র তাহারা দশক নহে, সকলেষ্ট এক এক জন গঠন-তৎপর পটুয়৷ ৷ পণ্ডিত মহাশয়ের হাতে-কলমে কিছুই বড় একটা করিতে হয় না । বিনা শাস্তিতেও হাপাইয়া উঠিয়া তিনি কেবল মাঝে মাঝে বন্দে মাতরং বলিয়া ডাক ছাড়েন,---ছলেরা ও কাজ করিতে করিতে পণ্ডিত মঙ্গশয়ের সহিত সমস্বরে বনে মাতরং শব্দে গগন ফাটতয়া তোলে। ছেলের দল এই এক বিষয়ে নিৰ্ব্বিরোধে তাহাকে মানিয়া চলে । এইরূপ আনন্দমস্তুতর মধ্যে যথাসময়ে উৎসবআগ্নেfজন সম্পন্ন ঠাইল । মাঠ, চালা, তাম্বু, রঙ্গিন বস্ত্রে, নিশানে, ফলে ফুলে সজ্জিত গুচয় উঠিল । প্রেসি৬েণ্টের নামে প্রসাদপুবের সকল ইংরাজট নিমন্ত্ৰিত ইষ্টলেন । রাজ। ল নামে ধনী দরিদ্র সকল প্রজাই আহূত ইষ্টল । আশে-পাশের জমাদার এব" কৰ্ম্মচারিগণও নিমন্থণ-পঐ পাইলেন। র্যাহারা পত্ৰ পান নাই –ৰ্তাহার ৪ ডিক্ষা করিয়া নিমন্ত্রণ লইতে লাগিলেন। বলা বাহুল্য, বিজুনকুমার কিছু পূৰ্ব্ব হইতেই প্রসাদপুরে অtসিয়াছেম এবং তাহারও নিমন্ত্রণ হইয়াছে । আজ জোতিৰ্ম্ময়াৰ মহানন্দের দিন । কিন্তু সে আনন্দে তাহার অধীরতা প্রকাশ পায় নাই । ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেব সস্ত্রীক গাড়া চইতে নামিবণমাত্র ছেলেরা বনে মাতরং ধ্বনিতে র্তাহীদের সমাদৃত করিয়া মঞ্চে অনিয়া বসাইল । রাজা কন্যাকে লইয়। প্রেসিডেন্টের পাশেই বসিলেন, বিজনকুমার র্তাহীদের পার্শ্বে-ষ্ট স্থান গ্রহণ করিলেন । অষ্টান্ত ইংরাজ ও জমাদারগণও এইস্থানে বসিলেন । সভাপতি এবং তৎপত্নীকে ফুলগুচ্ছ এবং ফুলমাল্য উপহারে জ্যোতিৰ্ম্মশ্ব অভিনন্দিত করিবার পর কতকগুলি গেরুয়া বস্ত্রপরিহিত ভিক্ষুক-ব্রাহ্মণবেশী বালক গান আরও করিল— ভিক্ষাং দেহি জননি গো, ভরিয়ে দে বুলি , আর কিছু চাহি না ও শুধু পদধূলি । শুধু মা গেt চাই বয়, এই আশীৰ্ব্বাদ কর, তোমার সেবায়ু প্রাণ পুণ ক’রে তুলি । মনে রাখি যেন তোরে সকল কাজে, তোর দুঃখ নিশিদিন প্রাণে যেন বাজে । তব মুখ সব আগে নিত্য যেন মনে ভাগে তোমার চিস্তাতে যেম সব চিন্তা ভুলি । স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী গানের পর প্রেসিডেণ্ট অভিভাষণ পাঠ করিলেন, তাহার পর খেলা আরম্ভ হইল । ফুটবল প্রভৃতি খেলা কাল হইবে, চালার ভিতরে যে সব খেলা হষ্টতে পারে--তাহারই দিন অীজ। প্রথমে আরম্ভ হইল কুস্তি । তাহার মীমাংসা হইয়া গেলে --১৫ মিনিট কাল অবসর দেওয়া হইল । ইহার পর লাঠালাঠি প্রভৃতি খেলা আরম্ভ হইবে । চতুর্দশ পরিচ্ছেদ সকলে খেলা দেখিতে মত্ত,কিন্তু বিজনের সে দিকে মন ছিল না ; সে মাঝে মাঝে জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর দিকে আড়নয়নে দৃষ্টিপাত করিতে করিতে নিম্নলিখিত কবি তার লাইনটি মনে মনে আবৃত্তি করিতেছিল। “Eain would I climb, but that { se ar to fall–” যদি জ্যোতিৰ্ম্ময়ী তাহার মনের কথা জানিতে পারিতেন, তাহা হইলে কি রাজ্ঞী এলিজেবেথের মতন বলিতেন— “If thy inind fail thee, do not climb at all” বিজনের বাউীর মেয়ের নিমন্ত্রণে যাইবার সময় কত জরাজড়াও কিংখাপ বস্ত্রে, কত রাশি রাশি রত্নালঙ্কারে ভূষিত হইয় ওঠেন, আজ জ্যোতিৰ্ম্মীর সাজসজ্জার অনাড়ম্বর বিজনের চক্ষে ভারী নূতন বলিয়া ঠেীকল । বালিকা পরিয়াছে একখানি জরী-কিনার নীলাশ্বরী বারাণসী সাড়ী, তদুপযোগী একটি জ্যাকেট ও ওড়না । অলঙ্কার দু’চারিখানি যাহা পরিয়াছে, বসনের মধ্যে সেগুলি একরূপ ঢাকাই পড়িয়া গিয়াছে। দেখা যাইতেছে কেবল তাহার শিরোভূষণ-–ওড়নার উপরিস্থিত হীরক-টায়ের-রাজ আজ তাহার জন্মদিনে এই উপহারটি প্রদান করিয়াছেন । এই মুকুটছটায় তাহাকে চিত্রাঙ্কিত দেবীমূৰ্ত্তির ন্যায়ই জ্যোতিৰ্ম্ময়ী করিয়া তুলিয়াছিল। ভারত-কন্যা এত মুন্দরী ! ইংরেজগণ মুগ্ধনেত্ৰে দেখিয়া বঙ্গাস্তঃপুরের মহিমা কল্পনা করিতেছিলেন। আর বিজনকুমার ? এই জ্যোতির নিকট কিরূপে পৌছিবে, কখনও পৌছিতে পরিবে কি না, তাহাই ভাবিয়া একান্ত ম্রিয়মান হুইয়া পড়িয়ছিল । বাtয়াম-ক্রীড়ার ১৫ মিনিট কাল বিরাম অবসরে ভিন্ন ভিন্ন দল ভিন্ন ভিন্ন তাতে আহারে আহুত ছইলেন ।