পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

woe “অদ্যত্র পালাবার কথা নয় ত ? ভয় হয় যে শুনে ৷” শরৎকুমার সহস্তে ললিলেন, “এ ভয় নয়, বিস্ময় । একটা ভেল্লীবাঞ্জির মধ্যে প’ড়ে গেছি, স্নাজাবাহাদুর !" বলিয়া উঠিয় দাড়ীষ্টয়া তিনি পকেট ইষ্টতে রাজকুমারীর মুক্তার মালা বাহির করিয়া টেবিলে রাখিয়া দিলেন । রাজা মালাছড়া হন্তে উঠাঠয়া লইয়া দেখিতে দেখিতে কহিলেন, “এ ত মনে হচ্ছে রাণার মালা ?” “এই মালা অামাব বাক্রের মধ্যে পাওয়া গেছে ।” শুনিবৰ্ণমাত্র রাজার মনে হষ্টল, রাজকুমারীই এ মালা গোপনে ডাক্তারের বাক্সে রাগিয়া, যে কথা মুখে তাঙ্কাকে বলিতে পারেন নাই— প্রক রাস্তবে ভtহী ব্যক্ত করিয়াছেন । রাজা মনের কথা মনেষ্ট রাখিয়া--মালাগাছি শরৎকুমারের হাঙ্গের কাছে রাখিয়া বলিলেন,— “এ মালা তুমি পেয়েছ, তুমিই রাখ ; তবে র্যা’র মালা, তিনিষ্ট যদি ফিরে চান ত তাকেই পরিয়ে দিও।” এষ্ট সুস্পষ্ট ইঙ্গিতে শবংকুমারের মুখ লজ্জা-রক্তিম হইয়া উঠিল,--মালাগাছা টেবিলেষ্ট পড়িয়া রহিল,— তিনি মনের ভাল ঢাকিবার অভিপায়ে শূন্ত পেয়ালাটা মুগে উঠাষ্টম ধরিলেন । এই সময় সহসা শ্ৰামাচরণ গৃহাগত হইয়! টেবিলে মতির মালা দেখিয়৷ বলিয়া উঠিলেন, “এ কি, মাতব মালা এখানে প’ড়ে যে ? রাজকুমারীর মালা- না ? এক পেয়ালা চা দে, শরভ " শরৎকুমার পেয়ালাতে চ ঢালিতে প্রবৃত্ত হইলেন । রাজা জানেন, শ্রামচরণ স্তাণ্ডউইচ-ভক্ত, তাহার খালtথানা ঠfহার দিকে ঠেলিয়া দিয়া একটু চাপাহসি হাসিয়া বলিলেন, “এ মাল৷ ডাক্তারের লেখার বাক্সে পাওয়া গেছে ।" রাজা যা’ মনে করিয়াছিলেন, ঠিক সেই কথা শু্যামাচরণের মনেও উদয় হইল। তিনিও মনে মনে হাসিয়া মনে মনে বলিলেন, "এমন বোকা ছেলে যদি দুটি দেখে থাকি ! এ ছলের যদি এ দিকে কাণকড়ি বুদ্ধি ও সাহস থাকৃত, তা হ’লে কোন জন্মেই কার্য গুছিয়ে ফেলতে পাৰ্বত ।" মুখে বলিলেন, “আশ্চৰ্য্য কাণ্ড ত ! যা’ বাবা রাজকুমারীর কাছে, তিনি নিশ্চয়ই এর একট। explanation fore vitation " তাহাদের উভয়ের ভাবগতিক বুঝিয়া শরৎকুমার লজ্জিতভাবেই বলিলেন, “সেখান থেকেই আসছি। স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী আমার বাক্সে তার মালা পাওয়া গেছে শুনে তিনিও খুব আশ্চৰ্য্য হয়েছেন।” তবুও এ কথা শ্ৰামাচরণের মনে দৃঢ় প্রত্যয় জন্মিল না - বাঙ্গালা দেশেয় মেয়ে—তাদের বুক ফাটে তবু মুথ ফোটে না। রাজকুমারী হয় ত বা লজ্জয় কথাটা চাপিয়া গিয়াছেন ! সন্দিগ্ধভাবে তিনি কহিলেন, “রাজকুমারীও বলতে পারলেন না ? আচ্ছ, আমরা তদারক ক’রে দেগপ এখন, তুই এখন যা’, কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নিগে,— বেণী দেরী কর্লে চলবে না— দেখছিস্ ত ৫টা বাজে ।” 始 সকলেই ঘড়ীর দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন। রাজা বলিলেন, “এত দেরী হরে গেছে—বুঝতে পারি নি।" শরৎকুমার বলিলেন, “আচ্ছা, আমি তৰে ট্রাঙ্কটা গুছিয়ে আসি, সময় বেণী যাবে না তা’তে। অামি ফিরে এসে মালাছড়া নিয়ে রাজকুমারীকে দিয়ে আস্ব এখন। এখন আপনার কাছেষ্ট থাক।” শরৎকুমার চলিয়া গেলে রাজা বিস্ময় প্রকাশপুৰ্ব্বক কছিলেন, “ব্যাপারখানা কি, গাঙ্গুলি মশায়, কিছুষ্ট ত বুঝতে পারছিনে।” স্যামাচরণ তখন দুই টুকরা রুটিই এক সঙ্গে মুথে পুরিয়াছিলেন, কতকটা গিলিয়া ফেলিয়া জ৬িতকণ্ঠে কহিলেন, “তাই ত, আপনি একবার রাজকুমারীকে জিজ্ঞাসা করুন না ? কি জানি, লজ্জায় শরৎকুমারের কাছে কোন কথা যদি চেপে গিয়েই থাকেন।” রাজা কছিলেন, "না, গাঙ্গুলি মশায়, রাণী যখন বলেছে, সে এ সম্বন্ধে কিছু জানে না, তখন ঠিক কথাই বলেছে । এই যে ডাক্তায়—এর মধ্যে কাপড় গোছান হয়ে গেল ?” শরৎকুমার গৃহাগত হইয়া বলিলেন, “না, রাজাবাহাদুর, এই দেখুন, আর এক অদ্ভুত কাও !” বলিয়া একটি ক্ষুদ্র পিস্তল বুক-পকেট হইতে বাহির করিয়া টেবিলে রাখিয়া কহিলেন—“কাপড় গোছাতে গিয়ে ট্রাঙ্কের মধ্যে এই পিস্তল পেয়েছি ; এ ত আপনার পিস্তল, আমার বাক্সে রাখলে কে ?” সকলে অবাক হইয়া গেলেন । পিস্তলটা কেস হইতে বাহির করিয়া নাড়াচাড়া করিয়া দেখিতে দেখিতে রাজা বলিলেন, “এ-ও দেখছি সত্তোষের কাৰ ; কলকাতায় আসার দু’এক দিন আগে সন্তোষ একটি ছেলেকে নিয়ে আমার কাছে চাদ চাইতে আসে । জীন ত আমার চেক বইখান লেখার টেবিলের থোলা টানার মধ্যেই থাকে, সেই টানার মধ্যে এই পিস্তলটাও ছিল।