পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিলন-রাত্রি সিড়ির ঘরে বসিয়াই মালা জপিতে আরম্ভ করিলেন। র্তাঙ্কণর মৎলব সিদ্ধ হইল । বিঞ্চন ঘোড়ায় চড়িয়া কোথায় বেড়াইতে গিয়াছিল, বাড়ী ফিরিয়া সিডির ঘরে ঢ়fক বামাত্ৰ কৰ্ত্ত। হাকিলেন---"ঙ্কতভাগা--যাওয়া হয়েছিল কোথায় ?” বিজন চমকিয় উঠিল---পিতা যে ঘরের কোণে আসন পাতিয়া বসিয়া আছেন, সে প্রথমে তাহ। দেখে নাই। থমকিয় দাড়াইয়। বলিল-“একটু বেড়াতে গিয়েছিলাম।” “দিন নেই, রাত নেই, বেড়াতেই যাওয়া হচ্ছে—কোন বঁাপের শ্রাদ্ধ করতে-সেইটে নি। জুরচোর, লক্ষ্মীছাড়া-দে—আমার টাকা ফিরিয়েঘোড়া ডিঙ্গিয়ে তুমি ঘাস খাবে ভেবেছ—সেটি হচ্ছে না ।” বিজনের মেজাজটা আজ আগে থাকিতেই খারাপ আছে, আজ মাতৃমন্দিরের মুৰ্ত্তিতে একটা খুনের ভার তাহার উপরেই পড়িয়াছে। এক দিন সে ভাবিয়াছিল, পরের জীবন লইয়াই এই স্বদেশীপ্রতের খেলা সে থেলিবে, নিজের জীবনও যে এ থেলার পণ্য স্বরূপ দিতে হইতেও পারে- এ কথা ইতিপূৰ্ব্বে তাহার কোন দিন মনেই হয় নাই। পিতার গালিগালজি অন্ত দিনের দ্যায় সে ধীর চিত্তে সহ করিল না, উত্তরে অসহিষ্ণু ভাব প্রকাশ করিয়া কহিল,--“বেশ আপনি যখন চাচ্ছেন--আমি সে টাকা ফেরত এনে দেব, কিন্তু ধমুকের আশা তা হ’লে ত্যাগ করুন।” স্বজন রায় এরূপ উত্তর আশা করেন নাই, তিনি একটু নরম হইয়া বলিলেন,- “দেখ বেটা অকৃতজ্ঞ,–ধনসম্পদ অামি যে চাই—সে আমার জন্ত—না তোর জন্ত ? প্রসাদপুর রাজত্ব পেলে গদিতে বসবে কে, তুই না আমি ? সেইটে বল দেখি ?” কিন্তু আপনার অবিশ্বাসেই ত আমার মন খারাপ হয়ে যায়, বন্ধুকে আমি রোজই তাড়া দিচ্ছি—সে-ও নিশ্চেষ্ট ব’গে নেই, যদি প্রমাণ চান-- তাও দেথাতে পারি।”

  • আচ্ছ, তাই দেখা, চেষ্টা যে চলেছে, এট বুঝলেও ত নিশ্চিন্ত হ’তে পারি।”
  • আচ্ছা, আমুন তবে অামার ঘরে—* আবেগভরে এ কথা যলিয়া ফেলিয়াই বিজন অমৃতপ্ত হইয়া উঠিল, কিন্তু একবার বঁাকা পথে প। ফেলিলে সহজে আর সোজা পথ মেলে ন! |

હાઁ-૧ 8公 স্বজন রায় কৌতূহলা ক্রান্তচিত্তে তাহার সঙ্গ গ্রহণ কবিলেন । গৃষ্ঠে আসিয়া স আলমারী খুলিয়। একট। বন্দুক বাহির করিল, সবিস্ময়ে তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া তিনি কহিলেন, “এ কি ব্যাপার।” "প্রসাদপুরের অস্ত্রশালার বন্দুক !” স্বজন রায় ভাত-কণ্ঠে বললেন, "বন্দুক চুরী কবৃতে বলেছে কে তাঁকে ?- সৰ্ব্বনাশ ! ধরা পড়লে যে আমাদের জেলে যেতে হবে ।" “আপনার তাড়া খেয়ে আমিই বলেছিলুম তাকে, চুরাবিস্তাতে এমন ক’রে হাত পাকাও, যাতে ক’রে ধমুকটা পরে সহজেই হাতাতে পার ।" সুজন রায় মালা মাথার ঠেকাইয়া বলিলেন,— “দেখ, আমার মনে হচ্ছে, তোর বন্ধুটিও মাণিকতলার লোক । ঠিক ক’রে বল্ দেখি, তুই এ দলে আছিল কি না ? বড় যে ভয় ধরিয়ে দিলি !” জোরের সহিত মিথ্যা বলা বিজনের খুব অভ্যাস হইয়া গিয়াছে—এই কার্যটি এ দলের লোকের সর্ব প্রথম শিক্ষা ; সে দৃঢ় স্বরে বলিল,—“কি যে বলেন, আপনি ? অামার কি প্রাণের তয় নেই মা কি ?” তথাপি তাহার সন্দেহ মিটিল না,- তিনি বলিলেন, “লুকোসনে আমার কাছে, ঠিক ক’রে বল । যদি বা তাদের পাক-চক্ৰে ফাদে পড়ে থাকিস্, আমি ভোকে রাজ-সাক্ষী দাড় করিয়ে সে ফণদ থেকে উদ্ধার করব, বল, বিজন, বল।” বিজন অসঙ্কোচে বলিল,-“বৃথা ভয় পাচ্ছেন,— আপনার ছেলে হয়ে আমি রাজবিদ্রোহী হ’তে ঘাব, এ কখনো সম্ভবপর হয় ?” মুজনের মনের সন্দেহ তথাপি মিটিল না ; কিছু না বলিয়া কহিয়া ছেলের লেখার টেবিলের নিকট আসিয়া দেরাজটা টানিয়া খুলিয়া ফেলিলেন এবং কাগজপত্রগুল টানিয়া বাহির করিতে লাগিলেন । বিজন হাসিতে লাগিল। গুপ্ত চিঠিপত্র সে রাখিত না, পড়িয়াই তৎক্ষণাৎ ছিড়িয়া ফেলিত, নোট বহিতেও সন্দেহজনক কোন কথাই তাহার লেখা থাকিত না । কিন্তু হঠাৎ যখন দেরাজের মধ্য হইতে পিত অতুলেশ্বরের চেকখানা বাহির করিয়া ফেলিলেন— তখন সে অবাক হইয়া পড়িল । চেকখান যে এই দেরাজে রাথিয়াছে, তাহা সে একেবারেই ভুলিয়া গিয়াছিল।—চেকখানা লইয়া সুজন রায় বাতির নিকট ধরিয়া ভাল করিয়৷ দেখিতে লাগিলেন । দেখিলেন, দশ হাজার টাকার Bearer চেক ভাঙ্গান হয়