পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

6 o নাই এবং তিন দিন পূৰ্ব্বে চহার মেয়াদ ফুরাষ্টয়াছে । তিনি সবিস্ময়ে বলিলেন,- “এ কি ব্যাপার ।” বিজন এইবার কুষ্ঠিতভাবে কহিল, “রাজা বাহাদুরের কাছ থেকে আমার এক জন বন্ধু সভার জন্ত চাদ। এনেছিল ।” "কিন্তু, ভাঙ্গান হয় নি কেন ?" “আমাকে ভাঙ্গাবার জন্য দিয়ে, সে শঙ্কায় চ'লে গেল ; আমি ও কথাট। একেবারেই ভুলে গেছি।” “এত টাকা অতুল সমিতির জন্য দেবে বিশ্বাস হয় না। হয় ত বা এ জাল চেক, তাই ভাঙ্গীতে সাহস করে নি।" বলিয়া তিনি সেখান পকেটে পুরিয়া পুত্রকে বলিলেন– “আমি কিন্তু কাণষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেটকে বিদ্রোহীদলের খবর দেব। আর অতুলেশ্বর যে ঐ দলের নেতা, তাও বলব। এ চেকটা বা বন্দুকটা তাকে অবগু দেব না--তাতে তোর উপর দোষ আসতে পারে । এগুলো এখন হাতে থাক, পরে সময় বুঝে কাযে লাগলে চলবে । কিন্তু বিদ্রোহীদের সন্ধানে তোরও আমাকে সাহায্য করতে হবে। যদি বা এদের সঙ্গে তোর কোন গুপ্তযোগ থাকে, তবে একমাত্র এই উপায়ে রক্ষণ পাবি - বুঝলি !” পরদিনই যে ম্যাজিষ্ট্রেট এই স”বাদ লাভ করিলেন, তাহ বল! বাহুল । ম্যাজিষ্ট্রেট প্রসাদপুরে আসিয়া অবধি অতুলেশ্বরের ধ্যবহারে অসন্তুষ্ট। তিনি ম্যাজিষ্ট্রেটের সহিত দেখা করিতে আসিয়া যেরূপ সমতুল্যভাব দেখাইয়াছিলেন, —তাহ "সাহেবের” মনঃপুত হয় নাই, সুজন রায়ের অবনত সেলামই র্তাহার মনে নেটিক লোকের আদশ ভদ্রত। উপরন্তু রাজকন্ত। যে ক্লাউডেন সাহেবের বাড়ী যাতায়াত করিতেন, সে খবর তিনি জানিতেন, কিন্তু নবাগত ম্যাজিষ্ট্রেট পত্নীর সহিত তিনি ত কই দেখা করিতে আসিলেন না ? ইচ্ছাকৃত অবমাননা বলিয়াই ম্যাজিষ্ট্রেট "সাহেব” ইহা ধরিয়া লইলেন । আসল কথা অবগু অন্তরূপ ; মিসেস্ ক্লাউডেনকে রাজকতা এতই ভালবাসিতেন যে, এত শীঘ্র সেই স্থানে গিয়া তাহারই স্থলভুক্ত মেমের সহিত হস্তগলাপ করিতে র্তাহার মন কুষ্ঠিত হইয়া উঠিল, এই কষ্টকর ভদ্রতার কার্য্য আজ নয় কাল হইবে—বলিয়৷ স্থগিত রাখিতে রাখিতে কনফারেন্স অ সিয়৷ পড়িল। তাহার পর হইতে উভয় পক্ষে মনোমালিন্ত ঘটিল ৷ "সাহেব” রাজার এই স্বদেশানুরাগ অতি ঘূণ্য অপরাধ বলিপ গণ্য করিলেন, আর রাজাও *সাহেবের” আন্তীয় ব্যবহারে ত{হার প্রতি একান্ত স্বর্ণকুমারা দেবার গ্রন্থাবলী }বমুখ হইয় পড়িলেন । কস্তাকে সেখানে পাঠান দূরে থাকুক, নিজেই তাহদের সহিত দেখাশুনা পন্ধ করিলেন । এইরূপ ঘটনা হইতে ম্যাজিষ্ট্রেটের মন পূৰ্ব্ব হইতেই রাজ-বিরুদ্ধে প্রস্তুত ছিল । এই কাঠ-খড়ের উপর স্বজন রায়ের বাক্যাগ্নি পড়িবামাত্র সহজেই তাহ! জলিয়া উঠিল ; অতুল যে বিদ্রোহীদলের এক জন নেতা— ইহা তিনি বিশ্বাস করিলেন। স্বজনের নির্দেশে এবং সহযোগে পুলিসদল বন-জঙ্গল ভেদ করিয়া বিদেশহীদিগের গুপ্ত আডিডা আবিষ্কার করিবার অনুজ্ঞা প্রাপ্ত হইল । ● বিংশ পরিচ্ছেদ এবার ষেন মহারাণী শরৎকুমারকে অতিরিক্ত সুনজরে দেখিয়াছেন। জ্যোতি শ্ময়ী কলিকাতায় আসিয়া নানা মাসিক পত্রিক হইতে নানা পেীরাশিক ছবি সংগ্ৰহ করিয়া রাখিয়াছিল, ডাক্তার প্রসাদপুর যাইবার সময় তাহার হাতে সেই সকল ছবি ঠাকুরমাকে সে উপহার পাঠায়। শরৎকুমার চিকিৎসার অবসরে প্রারই প্রতিদিন একবার করিয়া মহারাণীর চরণদর্শনে আসিতেন এবং সেই ছবিগুলির সম্বন্ধে অবতারিত প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যার র্তাহার কৌতুহল নিবারণ করিতেন । তাক্তার চলিয়া যাইবার পর মহারাণী পরিতৃপ্তচিত্তে তাবিতেন, "মরি মরি ! দেখতে যেমন মুতী, পেটে তেমনি গুণ । চেহারায়, কথাবাৰ্ত্তায়, ব্যবহারে বিদ্যাবুদ্ধি, বিনয়, সৌজন্য যেন ফেটে পড়ছে ! মেয়েরও যে ছেলেকে মনে ধরেছে—তাত বোঝাই গেছে। অমন ছেলে মনে ধরবে না ত, ধর্বে কাকে । অতুলেরও ত এর প্রতি যথেষ্ট টান । তবুও যে বিয়েতে দেরী হচ্ছে কেন, সেইটেই আশ্চৰ্য্য। কে জানে বাৰু, অতুলের মনের নাগাল যদি কিছুতে *|७ब्रां ब्रि !" শুনাচরণের মধ্যবৰ্ত্তিতায় এ বিবাহ যাঁহাতে সত্বর সম্পন্ন হয়, এই অভিপ্রায়ে মহারাণী তাহাকে একবার পাঠাইলেন। তাহার বিশ্বাস, শু্যামাচরণ বুঝাইয়া বলিলেই এ সম্বন্ধে রাজার কৰ্ত্তব্য সজাগ হইবে । মহারাণীর কথা ত তিনি ধর্তব্যের মধ্যেই আনেন না ; মায়ের মুখে এ কথা শুনিলেই রাজা তাহা হাসিয়া উড়াইয়া দেন। শরৎকুমারের হাত