পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিলন-রাত্রি উঠিয়া টেবিলের ধারে বসিয়া কাব্যগ্রন্থখানার পাতা খুলিয়া আর্থারের ছবি আর একবার দেখিল, তাহার পর বইখানা বন্ধ করিয়া আপন মনে বলিল—“সে দিন কিন্তু কি মুন্দরভাবেই তিনি আমার সঙ্গে কথা কচ্ছিলেন ! তাকে আর সে দিন রাজা ব’লে মনে হচ্ছিল না । হব--অামি তারই রাণী হব, চেষ্টা করব র্তার মনের মত ছ’তে, তাকে মুখী করতে- রাজারই রাণী হব আমি।” গাড়ীর শক হইল, সে উৎকর্ণ হুইয়া সেই দিকে মনোনিবেশ করিল, মোটরের ভে পু বজিয়া উঠিল— সঙ্গে সঙ্গে গাড়ীখানা যেন ভিতরেই প্রবেশ করিল, হাসি তাড়াতাড়ি গাড়ীবারীন্দtয় অসিয়া দাড়াইল । ত্রিংশ পরিচ্ছেদ অনাদি মোটর হইতে নামিয়া দোতালার উপর উঠিতে ন উঠিতে হালি সিড়ির রেলিঙ্গের ধারে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “রাজকুমারী এলেন না যে, অনাদি-দl ?” সিড়ির শেষ ধাপটার উপরে চড়িয়া লইয়া অনাদি উত্তর করিল, “আসতে পার্বুলেন না তিনি। তাই আমি তোমাদের নিতে এসেছি ।” বহুবচন বাচ্যে হালি টীকা করিল "বাবাও যাবেন বুঝি r”

  • হ্যা, তারও ডাক পড়েছে।” হাসি আশ্চৰ্য্য হইল না । কৃষ্ণলাল বাবু এক জম সুদক্ষ দাবাখেলোয়াড় । যেরূপ তন্ময়ভাবে তিনি ওঙ্কাল্পতত্ত্ব লেখেন, খেলিতে বসিলে প্রায় সেইরূপই তদগতচিত্তে তিনি দাবীর বোড়ে টেপেন। রাজা .বাহাদুরেরও দাবাখেলাব বেশ একটু সখ আছে-- তিনি যে দিন মুখুয্যেবাড়ী আসেন, প্রায়ই এক হাত দাবী না খেলিয়া ফেরেন না। অার মাঝে মাঝে মুখুয্যেমহাশয়েরও এ জন্ত রাজভবনে তলব পড়ে।
  • আচ্ছা, অনাদি-দী, তুমি তবে বাধার ঘরে গিয়ে একটু বোসে, ছ’মিনিটের মধ্যে আমি প্রস্তুত হয়ে আসছি।” এই বলিয়াই হাসি এমন তাড়াতাড়ি অদৃগু হইয়া গেল যে, অনাদির বিষণ্ণতা তাহার মজরেই পড়িল না ।

কৃষ্ণলালের ধরে গিয়া অমাদি দেখিল, তিমি মুদ্রিতমানে চেকিতে বসিয়া আছেন। নিকটের টেবিলের উপর একরাশ খাতাপত্র, খাতাপত্রের উপর কলমটা গড়াগড়ি যাইতেছে, সম্ভবতঃ হাত श्रड cगछे श्रृंक्लिब श्रिीब्रांद्दछ ? डिनि नैंांशंzउद्र "為 কনুই দিয়া কতকগুলা কাগজপত্র চাপিয়া ডানহাতখান খোল খাতার উপর রাখিয়া ধ্যানস্থ হইয়া ভাবিতেছেন--ওঙ্কার শব্দের নিগুঢ়তত্ব। ঋষিগণ বিরাটু বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের যে প্রতিচ্ছায়া এই ক্ষুদ্র ওঙ্কারমন্ত্রের ধ্বনিতে প্রতিবিম্বিত করিয়া দেখাইয়াছেন, তাহারই উজ্জল মহিমা হৃদয়-দৰ্পণে প্রতিভাত দেখিয়া লিখিতে বসিয়া তিনি লেখার কথা ভুলিয়৷ গিয়াছেন । অনাদি একবার কাসিল, কোন ফল হইল না, জোরে জোরে দুই একবার পা নাড়িয়া চটিজুতার আওয়াজ করিল, তাহাও কৃষ্ণলালের কানে পৌছিল না, তিনি তখন এমনই ভাবভোর । কিন্তু অনাদিও ত বেশী বিলম্ব করিতে পারে না, সে তখন টেবিলের ইলেক্‌টিক ঘণ্টট বাজাইয়া দিল । এ ঘণ্টাটি ছিল রাজাবাহাদুরের,---কৃষ্ণলীল একদিন ইহার তারিফ করায় রাজা তাহাকে এটি উপহার প্রদান করিয়াছেন । ঘরে আনিয়া পৰ্য্যস্ত কৃষ্ণলাল কিন্তু ইহার ব্যবহার করেন নাই। তৃত্য শশীকে ডাকিবার সময় তাহার চিরাভ্যস্ত আদরবুলিগুলি কণ্ঠে আসিয়া বহির্গত হইবার জন্ত এমনই লাফালাফি করে যে, তাহাদের শাস্ত করিতে গিয়া হাতের কাছের ঘণ্টার কথা একেবারেই তিনি ভুলিয়া যান। ঘণ্টার মৃদুমধুর অবিশ্রাস্ত আওয়াজে কৃষ্ণলালের এইবার ধ্যানভঙ্গ হইল। নিকটে অনাদিকে দেপিয়, আহলাদে বিস্ময়ে তিনি বলিয়া উঠিলেন, “তুমি এসেছ, বাবা ! কতক্ষণ-কতক্ষণ ! ব’সে বাবা, বসে, খবর সব ভাল ত ?” অনাদি কোন ভণিত না করিয়া একেবারেই বলিল, “খবর বড় ভাল নয় ।” কৃষ্ণলীল ব্যাকুলভাবে একবার ওঙ্কারধ্বনি করিলেন,--তাহার পর উঠিয়া দঁাড়াইয়া বলিলেন, “খলর ভাল নয় ? কারো কি অস্বথ-বিমুখ হয়েছে ?” “আঞ্জে না-পুলিস এসেছে রাজবাহান্থরকে বন্দী ক'রে নিয়ে যেতে ” “পুলিস এসেছে রাজাবাহাদুরকে বনী ক’রে নিয়ে যেতে ” ভীতিবিহবল কণ্ঠ হইতে এই প্রশ্ন উঠিল। অনাদি বলিল—“আঞ্জে হ্যা /* অতঃপর এ সম্বন্ধে যাহা কিছু তাহার বলিবার ছিল, সংক্ষপে শেষ করিয়া বলিল, হাসিকে ও আপনাকে আমি নিতে এসেছি, তিনি আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চান ।” বৃদ্ধের গও বাহিঙ্গ বড় বড় দুই ফোটা অশ্রু