পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মিলন-রাত্রি “হে ভগবান অন্তৰ্য্যামী পুরুষ, এ কি করিলে তুমি ? তুমি ত জান আমার প্রাণের কথা ! আমার মনের ত্রিসীমানায় ত কোন অভিশাপকল্পনা ছিল না, আমার সৰ্ব্বস্ব লইয়া সেই অবোধ বাক্যকে নিরর্থক করিয়া দাও, প্রভু, তোমার বজদ ও অামার উপর ফেলিয়া ইহাদিগকে রক্ষা কর প্রভু !” তাহার হৃদয়ের চঞ্চল প্রেম আজি যেন সহসা স্থিবতা লাভ করিল। রাজকন্ত। তাহার মাথায় হাত বুলাইয়া বলিলেন, "অধীর হয়ে না, হাসি, বাবা নির্দোষ ; যদি সংসারে স্যায়-সত্যের জয় এতটুকুও থাকে, তবে তিনি মুক্ত হবেনই ।” • রাজকন্তর সংযম দেখিয়া হাসি অবাকু ইষ্টয়া গেল, অনেকটা প্রশান্ত হইয়। সে উঠিয়া বসিল । রাজ কন্য| বলিলেন, “দোষী আসলে আমি । কার্য্যতঃ না হ’লেও মনে মনে অনেক দিন থেকেই আমি বিদ্রোহী—রাজপক্ষের অন্তীয় শাসনে মৰ্ম্মে মৰ্ম্মে আমি আহত । এর প্রতীকfরচেষ্টীয় দোষ হয়ে থাকে ত দোষ সম্পূর্ণভাবে আমারই। আমার কায্যোদ্ধfব জন্যই বাবাকে তার কল্পনার রাজ্য থেকে টেনে এনে আমি পাশে বসিয়েছি। কিন্তু কিছুষ্ট $’ল না, চালি, দেশেব মঙ্গল বা বিশ্বের মঙ্গল কিছুষ্ট অীমা হ'তে হোল না, হাসি, কেবল পিতৃঘfতকের কাৰ্য কর্পূম । সকলই তঁর ইচ্ছা । হয় ৩ ব। এরও ফল আছে, সুফল আছে, এই অমঙ্গলের পশ্চাতে হয় ত কল্যাণ দাড়িয়ে আছে — সস্তান যেমন ভূমিষ্ঠ হবাপ আগে মাতৃগর্ভে অপেক্ষ কবে, সেই রকম। হোক, তার ইচ্ছাই পুর্ণ হেক্‌ ৷” রাজকন্যা নীরব হইয়। রছিলেন, তাহীর বিশ্বাসবলে হাসির দুৰ্ব্বল হৃদয় ও সবল হইয়া উঠিল । রাজকুমারী আবার বলিলেন, “আমার কি ইচ্ছা হয় জান ভাই, হাসি ?” উৎম্বকদ্বষ্টিতে হাসি তাহার দিকে চাহিয়া রহিল ; রাজকন্ত বলিলেন, “পুরাণে পড়া যায়, দেবতার বলিলাভে সস্তুষ্ট হয়ে মঙ্গলবর দান করতেন, এখনও সেই বিশ্বাসে লোকে বাণীর কাছে বলিদানের মানত করে । এ কথাটায় আমার কিন্তু কোন দিন প্রত্যয় জন্মায় নি । এর গৃঢ় তাৎপর্য্যই আমি ভেবে নিতুম। বলি অর্থে দুস্কৃতিরই বলিদান বুঝেছি। কিন্তু অ{জ সহজভাবেই এ কথাটা বিশ্বাস করতে ইচ্ছা হমেল আমার । ভগবান যদি দেশবঙ্গলে আমাকে বলি গ্রহণ করেন —তবে আমার জীবন সার্থক - ধন্ত হয় । হে ভগবান, মঙ্গল কর— কল্যাণ কর, পিতা মুক্ত হোন, দেশ মুক্ত হোক--অ্যর--ভার—” ليسوا শরৎকুমারের নাম তাহার জিহবাগ্রে আসিয়া থামিয়া পড়িল, তিনি ত অস্তুদেবতারই মত তাঙ্গার হৃদয়ে অধিষ্ঠিত মুখে অব তাই।ব কথা কি বলিবেন । তিনি মনে মনেই ঠাই৷র মঙ্গল প্রার্থনা করিয়! আবার বলিলেন –“ভারতভুমি কৰ্ম্মে এক হোক, ধৰ্ম্মে দৃঢ হোক, বিশ্বসংসারে স্তর সাম্যের প্রতিষ্ঠ! হোক, বলি গ্রহণ কর প্রভু আমাকে, আমার জীবন সুখ-শাস্তি সৰ্ব্বস্ব তোমাকে সমৰ্পণ করি— আমার প্রার্থন সফল কর প্রভু, এই মঙ্গল বর দান কপ |” বলিয়া তিনি যখন থাfমলেন, তখন তাহার গলা জড়।ইয়া অশ্রুপূর্ণ নেত্ৰে হাসি পলিল, “অমন ক'বে বলে না রাজ-কুমারি--- বল বল, অমন ক’রে বলির কথা ভাববে না তুমি ?” রাজকুমারী একটু বিয়ঃ হাসি হাসিয়া তাইকে বুকের কাছে টানিয়া লইয়া পলিলেন, “তোমার যখন বষ্ট হয়, তখন অমন ক’রে অরি বলব না হাসি ।” অfজ অfর রাজকন্যা একবার ও তাকে মা বলিয়া সম্বোধন কপিলেন না, তিনি বুঝিয়াছেন, রাজার সহিত হাসির বিবাহ আর এখন সম্ভবপর নহে । হাসির কিন্তু এই আদবের ডাক আজ শুনিতে বড়ই ইচ্ছা করিতেছিল । গুলি রাজকন্সার গলা ছাড়িয় দিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “এখন কোপায় নিয়ে যাবে র্তকে ?” রাজকন্ত দলিলেন “প্রসাদপুলে ।” “সেখানেই কি রাখবে ?” “বিচার শেষ হওয়া পৰ্য্যপ্ত বোধ হয় সেগনেষ্ট রাখবে, তাহার পর দি মুক্তিলাভ করেন 'ত ভাল— নইলে –" হাসি নীরবে চাহিয়া রহিল --রাজকণ্ঠা একটু থামিয়া দম লইয়া বলিলেন, “দ্বীপান্তবে |ঠতে পারে ।” প্রাণদণ্ডের কথাট। রাজকন্যা মুপে অগনিতে পারিলেন না ; তাহfর মনের পল-– সাঙ্গস এগানে কুলাইল না । হাসি তfংrর প্রতিধ্বনির মত বলিল, "দ্বীপ স্তরে । কোথায় সে কোন দেশ । আমরাও সঙ্গে যেতে পরূিপ শু }" ই সি দ্বীপান্তপ সম্বন্ধে এমনি "অজ্ঞ । রাজকন্যা কেfন উওর করিলেন না - এ প্রশ্ন তাহার কানে পৌছিল কি না, তাহীও ঠিক বোঝা গেল না । তিনি তখন স্তিমিত নেত্ৰে গুণ গুণ করিয়া স্তোত্র গান পরিয়াছেন-- তুহি একমেবাদ্বিতীয়ং সত্য সুন্দর শিব । দেহু কুরুণ1– কর করুণ! বিভেণ ।