পাতা:স্বর্ণকুমারী দেবীর নূতন গ্রন্থাবলী.djvu/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

స్చి সম্ভবতঃ উচ্চার চেষ্টায় রাজপক্ষে বিরুদ্ধ প্রমাণ হইয়া দাড়াইৰে । কিন্তু অতুলেশ্বর ভীরু কণপুরুষ নহেন, এ ভয় তাহাকে কাবু করিতে পারিল না । কেবল যত্নবদ্ধ ধৈর্য্যবাধ তাঙ্কার ধ্বসিয়া গেল । উঠিয়া ট্রাডাষ্টয়া ক্রুদ্ধস্বরেই তিনি কছিলেন - “বেশ, আপনার যা ইচ্ছা, তাই করবেন। আমি সহস্রবণর মৃত্যু বরণ করতে প্রস্তুত, তবু কল্প পিণে আত্মরক্ষা করৰ মা ।” স্বজন ‘মোরিয়া’ হইয়া উঠিলেন, দাড়াইয়া উঠিয়া গালি দিলেন ---“অধঃপাতে যাও ;-অধঃপাতে যাও ; আমার পয়ে ধ'রে এক দিন যদি দয়া ভিক্ষা করতে না হয়, তবে আমার নাম সুজন রায় নয়।” বলিয়। তিনি চলিয়া গেলেন–রাজা পুনরায় চৌকিতে বসিলেন । বহিরে সিডির নিকট আসিয়া সুজন রায় দেখিলেন, জ্যোতিৰ্ম্ময়ী দেওয়ালে ঠেস দিরা পাযাণমূৰ্ত্তির মত স্তব্ধভাবে দাড়াষ্টয় আছেন। তিনি সবিস্ময়ে দাড়াইয়া কছিলেন, “রাজকুমারী জ্যোতিস্মৃষ্ট্রি—তুষ্ট মা !” জ্যোতিৰ্ম্ময়ী পাষাণমূৰ্ত্তির দ্যlয়ই স্তব্ধ নিশ্চল হইয়া রহিলেন,—কোন উত্তর করিলেন না। তিনি আবার কহিলেন– “দেথ মা, তোর জন্যই এই বিবাদ-বিসংবাদ,চিরকালই মেয়েদের জন্য সংসার জ'লে পুড়ে ছারখার হয়ে উঠেছে, সীতার জন্ত সোনার লঙ্কা ছারখার ; তিলোত্তমীর জন্য শুম্ভ-নিশুম্ভের মৃত্যু , পদ্মিনীর জন্ত চিতোর আক্রমণ- এ সব ত জানিস তুই। এখন তুমি যদি মা জননি, অামার পুত্রবধু হ’তে রাজি হও ত সব বিপদ থণ্ডে যায়— তোমার বাব1 রক্ষণ পান, তোমাদের ধনসম্পদ রাজ্য সব বজায় থাকে । বল মা তুমি, তোমার একটা কথার উপরক্ট সব নির্ভর করছে ।” হঠাৎ পাযাণমূৰ্ত্তি নড়িয়া উঠিল, তাহার ওষ্ঠাধর ঈষৎ বিভিন্ন হইল, কি যেন সে বলিতে গিয়! আবার নিৰ্ব্বাক্ হইয়া পড়িল । স্বজন রায় অাবীব বলিলেন—“ভেবে দেখ মা, তুমি ইচ্ছা করলেই সব দিক্ রক্ষা হয় ।” বালিকার কথা ফুটিল, তিনি *ভেবেছি * “কি ভেবেছ ? হবে মা জননি, তুমি আমার পুত্রবধু ? ধীরে ধীরে যন্ত্রচালিত কণ্ঠ হইতে বাক্যদুট হইল, "झ्श !" মানন্দ-বিস্ময়ে সুজন রায় নিতৃক্ক কুইঙ্গা গেলেন। বলিলেন— স্বর্ণকুমারী দেবীর গ্রন্থাবলী অধরেীষ্ঠে গসি ৰিস্ফারিত হষ্টয়া মিলাষ্টয়া পড়িল— তিনি গৰ্ত্তীয়ম্বরে কহিলেম—”সত্যি বলছিস্ মা ?” জ্যোতিৰ্ম্মী এবার দৃঢ়স্বরে উত্তর করিলেন – সত্যই বলছি। আপনার কাছে পিতার বিরুদ্ধ প্রমাণ কি আছে—যদি আমাকে দেন—তবে—” “কি করবে তুমি ?” “ছি ড়ে ফেলব ।” সুজন মায় মুখে যতই অক্ষালন করুন, এই চেক কোর্টে দাখিল করিলে তাঙ্গার পক্ষেও ক্ষতিজনক গুষ্টতে পারে- এ ভয়টুকুও তাছার মনে ছিল । তিনি সহজেই চেকথান জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর হাতে দিয়া কহিলেন—“এই নেও মা—আমি ছিড়ে ফেলতুম— না হয় তুমিই ছেডে। আর একবার বল মা, আমার পুত্রবধূ হবে তুমি ?” জ্যোতিৰ্ম্ময় একটু বিরক্তির স্বরে কছিলেন, "একশবার এক কথা বলার ত দরকার নেই ।” “কিন্তু ইতোমধ্যে যদি শরৎকুমার এসে পড়ে ?” শবের মত বিবর্ণ, প্রাণম্পন্দহান চক্ষু দুইটা জ্যোতিৰ্ম্ময়ীর সহস জলিয়া উঠিল । সতেজে মৰ্ম্মাহত। নারী কষ্টিলেন - “তার নাম এর মধ্যে আনেন কেন ? আমি কথা দিয়েছি, বস্– সেইটে মেনে নিন।” সুজন রায় অবাকৃ ইষ্টয়া গেলেন। কি তেজস্বিনী অথচ সরলপ্রকৃতি রমণী । এইরূপ নারীর সান্নিধ্যে ইতঃপূর্সে কোন দিন সুজন রায় আসেন নাই —-এ জাতীয় জীবের মৰ্ম্মবহুস্ত ভেদ করা তাঙ্কার পক্ষে অসম্ভব, তবে জ্যোতিৰ্ম্মী যে বাক্যদান করিলেন, তাহা যে লক্তন করিবেন না, সেটুকু তিনি ঠিক বুঝিলেন । আনন্দের অতিশয্যে দুই হাত তুলিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিয়া তিনি বলিলেন, “সৰ্ব্বমঙ্গলা মা আমার প্রসন্ন হয়েছেন, আর কোন ভয়ভাবনা নেই। রায়বংশের ঘরে ঘরে এত দিনে মিলনের বাতী জললে । আমি মা এখন যাই, এ খবরটা তোর বাবাকে তুই জানাস, মা । আমি বাড়ী গিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করি গে।” পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ সুজন রায় চলিয়া গেলেন, দুঃস্বপ্ন-সস্কুল নিদ্রাবিঘোর হইতে জ্যোতিৰ্ম্মী সহসা যেন জাগি৷