পাতা:স্বর্ণলতা-তারকনাথ গঙ্গোপাধ্যায়.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বর্ণলতা : ১২৮ পম্বোপেক্ষা অধিক বিরক্ত হইয়া সেখানিও রাখিয়া দিলেন । মনে করিলেন পত্র লিখি। কাগজ কলম লইয়া লিখিতে আরম্ভ করিলেন । উপরে তারিখ দিলেন । দিয়া ভাবিতে লাগিলেন, কাহাকে লিখি ! এ, ও, সে, এক এক করিয়া কত নাম উপস্থিত হইতে লাগিল । কাহাকেও লিখিতে ইচ্ছা হইল না। পরে পিতাকে-পত্র লিখিবেন স্থির করিলেন। কাগজের উপর ইংরাজিতে তারিখ দিয়াছিলেন, সেটকে ছুরি দিয়া কাটিয়া ফেলিলেন। পরে বাংগালায় লিখিতে লাগিলেন। খানিক লিখিয়া পড়িয়া দেখিলেন, অনেক ভুল হইয়াছে। এক এক করিয়া ভুলগুলি সংশোধন করিলেন, কিন্তু তাহাতে চিঠিখনি অত্যন্ত অপরিৎকার দেখা যাইতে লাগিল । এ জন্য সেখানি ছিড়িয়া ফেলিলেন । আর একখানি কাগজ লইলেন, তাহাতেও ভুল হইতে লাগিল, “দর হোক" বলিয়া সেখানিও ছিড়িয়া ফেলিয়া শয়ন করিলেন । হেমচন্দ্র এ-দিকে ও-দিকে অনুসন্ধান করিয়া বৈঠকখানায় আসিলেন । গোপালকে বৈঠকখানার বিছানায় দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “গোপাল, তুমি এইখানেই আছ, তবে আমার ডাকে উত্তর দাও নাই কেন ?" গোপাল কহিলেন, “তুমি কখন ডাকলে ?” হেম । বিলক্ষণ ; ডেকে ডেকে আমার গলা ভেঙ্গে যাবার জো হয়েছে যে ? ( গোপালের হাত ধরিয়া ) চল যাই, স্নান করি গিয়ে । গোপাল জিজ্ঞাসিলেন, “কলিকাতায় যাবার দিন কবে স্থির হ’ল ?” হেম । এখনও হয় নাই । বাবা পাঁজি দেখবেন, তবে স্থির হবে । গোপাল । “স—র—” সবণের বিবাহের বিষয় কি কথা হইল, জিজ্ঞাসা করিতে গিন্নাছিলেন ; কিন্ত: “সর” বলিয়া চপ করিলেন, আর অধিক কহিতে পারিলেন না। ভাগ্যক্রমে হেমের মন অন্য বিষয়ে নিয়োজিত ছিল । সুতরাং গোপালের কথা তাঁহার কণীকহেরে প্রবেশ করে নাই। উভয়ে স্নান করিয়া আসিলেন এবং তাহারাদি করিয়া বৈঠকখানার বিছানায় বিশ্রামাথ শয়ন করিলেন । পঞ্চত্রিংশ পরিচ্ছেদ নীলকমল ও বিধুভুষণ তথা শশিভূষণ গোপালকে কলিকাতায় রাখিয়া বিধ ভাষণ একজন ডেপুটী কলেক্টরের সহিত ঢাকায় গিয়াছিলেন, তাহা পাঠককে বলা হইয়াছে । যে ডেঃ কলেক্টর বাব বিধকে লইয়া গিয়াছিলেন, তিনি বড় গীতবাদ্যপ্রিয় ছিলেন । বিধভষেণকে ঢাকা জেলায় লইয়া গিয়া তাঁহাকে এক মহরিগিরি কম দিলেন । বিধভষেণ প্রথমতঃ সে কম সচাররাপে চালাইতে পারিতেন না, কিন্তু সত্বরই সে বিষয়ে তাঁহার পটতা জন্মিল । দিবসে কাজকৰ্ম্ম করিতেন । সায়ংকালে ডেপুটী বাবকে কিঞ্চিৎ কিঞ্চিৎ