পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సెy স্বামীজীর বাণী ও রচনা আমাকে তাড়াইয়া দিতে এবং অনশনে মারিয়া ফেলিতে তাহারা আমেরিকাবাসী সকলকে বলিতে লাগিল । আর আমার বলিতে লজ্জা হইতেছে যে, আমার একজন স্বদেশবাসী ইহাতে যোগ দিয়াছিলেন–তিনি ভারতের সংস্কারকদলের একজন নেতা । ইনি প্রতিদিনই প্রচার করিতেছেন, খ্ৰীষ্ট ভারতে আসিয়াছেন। খ্ৰীষ্ট কি এইরূপেই ভারতে আসিবেন ? ইহাই কি ভারত-সংস্কারের উপায় ? আমি ইহাকে অতি বাল্যকাল হইতেই জানিতাম, তিনি আমার একজন পরম বন্ধু ছিলেন। অনেক বৎসর যাবৎ আমার সহিত এই স্বদেশবাসীর সাক্ষাৎ হয় নাই, সুতরাং তাহাকে দেখিয় আমার বড়ই আনন্দ হইল, আমি যেন হাতে স্বর্গ পাইলাম। কিন্তু তাহারই নিকট আমি এই ব্যবহার পাইলাম ! যেদিন ধর্ম-মহাসভায় আমি প্রশংসা পাই, যেদিন চিকাগোয় আমি সকলের প্রিয় হই, সেই দিন হইতে র্তার সুর বদলাইয় গেল ; তিনি অপ্রকাশুৈ আমার অনিষ্ট করিতে, আমাকে অনশনে মারিয়া ফেলিতে, আমেরিক হইতে তাড়াইতে সাধ্যমত চেষ্টা করিতে লাগিলেন । জিজ্ঞাসা করি, খ্ৰীষ্ট কি এইরূপেই ভারতে আসিবেন ? জিজ্ঞাসা করি, বিশ বৎসর খ্রষ্টের পদতলে বসিয়া কি তিনি এই শিক্ষা পাইয়াছেন ? আমাদের বড় বড় সংস্কারকগণ যে বলিয়া থাকেন, খ্ৰীষ্টধর্ম এবং খ্ৰীষ্টশক্তি ভারতবাসিগণের উন্নতিবিধান করিবে, তাহা কি এইরূপে হইবে ? অবশ্ব যদি উক্ত ভদ্রলোককে উহার দৃষ্টান্তস্বরূপ ধরা যায়, তবে বড় আশা আছে বলিয়া বোধ হয় না । আর এক কথা। আমি সমাজ-সংস্কারকগণুের মুখপত্রে পড়িলাম যে, তাহারা বলিতেছেন আমি শূদ্র, আমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছেন-শূদ্রের সন্মাসী হইবার কি অধিকার আছে? ইহাতে আমার উত্তর এই ; যদি তোমরা তোমাদের পুরাণ বিশ্বাস কর, তবে জানিও আমি সেই মহাপুরুষের ংশধর, যাহার পদে প্রত্যেক ব্রাহ্মণ যিমায় ধর্মরাজায় চিত্রগুপ্তায় বৈ নমঃ’ মন্ত্র উচ্চারণসহকারে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করেন, আর যাহার বংশধরগণ বিশুদ্ধ ক্ষত্রিয়। এই বাঙালী সংস্কারকগণ জানিয়া রাখুন, আমার জাতি অন্যান্য নানা উপায়ে ভারতের সেবা ব্যতীত শত শত শতাব্দী ধরিয়া ভারতের অর্ধাংশ শাসন করিয়াছিল। যদি আমার জাতিকে বাদ দেওয়া যায়, তবে ভারতের আধুনিক সভ্যতার কতটুকু অবশিষ্ট থাকে ? কেবল বাঙলা দেশেই আমার জাতি