পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় জীবনে বেদাস্তের কার্যকারিতা ו"סל এ যে শুধু সন্মাসীর জন্য ছিল, এ যে রহস্য-বিদ্যা ! প্রাচীনকালে অরণ্যবাসী সন্ন্যাসীরাই কেবল উপনিষদের চর্চা করিতেন! শঙ্কর একটু সদয় হইয়া বলিলেন, গৃহস্থেরাও উপনিষদ অধ্যয়ন করিতে পারে ; ইহাতে র্ত্যহাদের কল্যাণই হইবে, কোন অনিষ্ট হইবে না। তবু লোকের মন হইতে এ সংস্কার এখনও যায় নাই যে উপনিষদে কেবল সন্ন্যাসীদের আরণ্যক জীবনের কথাই আছে । আমি তোমাদিগকে সেদিনই বলিয়াছি, যিনি স্বয়ং বেদের প্রকাশ সেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দ্বারাই বেদের একমাত্র টীকা —একমাত্র প্রমাণিক টীকা-গীতা চিরকালের মতে রচিত হইয়াছে । ইহার উপর আর কোন টীকাrটিল্পনী চলিতে পারে না । এই গীতায় প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য বেদান্ত উপদিষ্ট হইয়াছে। তুমি যে-কাজই কর না কেন, তোমার পক্ষে বেদাস্তের প্রয়োজন। বেদান্তের এই-সকল মহান তত্ত্ব কেবল অরণ্যে বা গিরিগুহায় আবদ্ধ থাকিবে না ; বিচারালয়ে ভজনালয়ে, দরিদ্রের কুটিরে, মংস্যজীবীর গৃহে, ছাত্রের অধ্যয়নাগরে—সর্বত্র এই-সকল তত্ত্ব আলোচিত হইবে, কার্যে পরিণত হইবে । প্রত্যেক নরনারী, প্রত্যেক বালকবালিকা—যে যে-কাজ করুক না কেন, যে যে-অবস্থায় থাকুক না কেন –সর্বত্র বেদাস্তের প্রভাব বিস্তৃত হওয়া আবশ্ব্যক । আর ভয়ের কোন কারণ নাই। উপনিষদ-নিহিত তত্ত্বাবলী জেলে-মালা প্রভৃতি জনসাধারণ কিভাবে কার্যে পরিণত করিবে ? ইহার উপায় শাস্ত্রে প্রদশিত হইয়াছে ; অনস্ত পথ আছে—ধৰ্ম অনস্ত, ধর্মের গণ্ডি ছাড়াইয় কেহই যাইতে পারে না। আর তুমি যাহা করিতেছ, তোমার পক্ষে তাহাই অতি উত্তম । অতি স্বল্প কৰ্মও যথাযথভাবে অনুষ্ঠিত হইলে তাহা হইতে অদ্ভূত ফল লাভ হয় ; অতএব যে যতটুকু পারে করুক। জেলে যদি নিজেকে আত্মা বলিয়া চিস্থা করে, তবে সে এক জন ভাল মংস্যজীবী হইবে ; ছাত্র যদি *নিজেকে আত্মা বলিয়। চিস্থ করে, তবে সে একজন ভাল বিদ্যার্থী হইবে। উকিল যদি নিজেকে আত্মা বলিয়া চিন্তা করে, তবে সে একজন ভাল আইনজ্ঞ হইবে । এইভাবে অন্যান্য সর্বত্র । আর ইহার ফল হইবে এই যে, জাতিবিভাগ অনন্তকালের জন্য থাকিয়া যাইকে। সমাজের প্রকৃতিই এই—বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত হওয়া । তবে চলিয়া যাইবে কি?" বিশেষ বিশেষ অধিকারগুলি আর থাকিবে না। জাতিবিভাগ প্রাকৃতিক নিয়ম । সামাজিক জীবনে আমি কোন বিশেষ কর্তব্য সাধন