পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভারতীয় মছুাপুরুষগণ >8Vり ইহা হইতে কি পাওয়া যায় ? সিদ্ধান্ত এই যে, একদিকে সনাতন তত্ত্বসমূহ রহিয়াছে, ঐগুলি স্বতঃপ্রমাণ, উহারা কোনরূপ যুক্তির উপর পর্যন্ত নির্ভর করে না, ঋষিগণ—যত বড়ই হউন বা অবতারগণ যত মহিমাসম্পন্নই হউন—তাহাদের বাক্যের উপরও নির্ভর করে না। আমরা এখানে এ-কথা বলিতে পারি যে, ভারতীয় চিস্তার এই বিশেষত্ব আছে বলিয়া আমরা বেদান্তকেই একমাত্র সার্বভৌম ধর্ম বলিয়া দাবি করিতে পারি, বেদান্তই জগতের একুমাত্র সার্বভৌম ধর্ম ; কারণ উহা কোন ব্যক্তিবিশেষের মতকে প্রামাণিক বলিয়া গ্রহণ করিতে উপদেশ দেয় না, উহা কেবল সনাতন তত্ত্বসমূহই শিক্ষা দিয়া থাকে ; ব্যক্তিবিশেষের সহিত অচ্ছেদ্যভাবে জডিত কোন ধর্ম জগতের সমগ্র মানবজাতি গ্রহণ করিতে পারে না । আমাদের দেশেই মুমের! দেখিতে পুই, এখানে কত মহাপুরুষ জন্মিয়াছেন। আমরা একটা ক্ষুদ্র শহরেই দেখিতে পাই, সেই শহরের বিভিন্ন ব্যক্তি বিভিন্ন লোককে নিজেদের আদর্শ করিয়া থাকে । সুতরাং মহম্মদ বুদ্ধ বা খ্ৰীষ্ট-এরূপ কোন এক ব্যক্তি কিরূপে সমগ্র জগতের একমাত্র আদর্শস্বরূপ হইতে পারেন ? অথবা সেই এক ব্যক্তির বাক্য-প্রমাণেই বা সমগ্র নীতিবিদ্যা, আধ্যাত্মিক তত্ত্ব ও ধর্মকে সত্য বলিয়া কিরূপে স্বীকার করা যায় ? বৈদান্তিক ধর্মে এরূপ কোন ব্যক্তিবিশেষের বাক্যকে প্রমাণ বলিয়া স্বীকার করিবার আবশ্বক হয় না। মানবের সনাতন প্রকৃতিই ইহার প্রমাণ ; ইহার নীতিতত্ত্ব মানবজাতির সনাতন আধ্যাত্মিক একত্বরূপ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ; এই একত্ব চেষ্টা করিয়া লাভ করিবার নয়, উহ! পুর্ব হইতেই লব্ধ । - অন্যদিকে আবার আমাদের ঋষিগণ অতিপ্রাচীন কাল হইতেই বুঝিতে পারিয়াছিলেন যে, জগতের অধিকাংশ লোকই কোন না কোন ব্যক্তির উথর নির্ভর না করিয়া থাকিতে পারে না । লোকের কোন না কোন আকারে একটি ব্যক্তিভাবাপন্ন ঈশ্বর চাই। যে বুদ্ধদেব ব্যক্তিভাবাপন্ন ঈশ্বরের বিরুদ্ধে প্রচার করিয়া গেলেন, তাহার দেহত্যাগের পর পঞ্চাশ বৎসর যাইতে না যাইতে তাহার শিস্যেরা তাহাকেই ঈশ্বর করিয়া তুলিল। কিন্তু ব্যক্তিবিশেষ ঈশ্বরের প্রয়োজন আছে। আমরা জানি, ঈশ্বরের বৃথা কল্পনা অপেক্ষা—অধিকাংশ স্থলেই এইরূপ কাল্পনিক ঈশ্বর মানবের উপাসনার অযোগ্য—মহত্তর জীবন্ত ঈশ্বরসকল এই পৃথিবীতে সময়ে সময়ে আমাদের মধ্যেই আৰুিভূত হইয়া বাস