পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (পঞ্চম খণ্ড).pdf/১৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

為br3 স্বামীজীর বাণী ও রচনা ধর্ম ষে সর্বোচ্চ আদর্শ—ইহা তো সত্যই, কিন্তু আমি এখানেসে-কথা বলিতেছি না ; আমি বলিতেছি, ভারতের পক্ষে কাজ করিবার ইহাই একমাত্র উপায়— প্রথমে ধর্মের দিকটা দৃঢ় না করিয়া এখানে অন্য কোন বিষয় চেষ্টা করিতে গেলে সর্বনাশ হইবে । সুতরাং ভারতীয় বিভিন্ন ধর্মের সমন্বয়-সাধনই ভবিষ্যৎ ভারত-গঠনের প্রথম কর্মসূচী, যুগযুগান্তধরিয়া অবস্থিত কালজয়ী ঐ মহাচল হইতেই এই প্রথম সোপান প্রস্তুত করিতে হইবে। অামাদিগকে জানিতে হইবে যে—দ্বৈতবাদী, বিশিষ্টাদ্বৈতবাদী, অদ্বৈতবাদী, শৈব, বৈষ্ণব, পাশুপত প্রভৃতি সকল সম্প্রদায়ের হিন্দুর মধ্যেই কতকগুলি সাধারণ ভাব আছে ; আর নিজেদের কল্যাণের জন্য, জাতির কল্যাণের জন্য আমাদিগকে পরস্পর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয়ু লইয়া বিবাদ ও পরস্পর ভেদবুদ্ধি পরিত্যাগ করিবার সময় আসিয়াছে। নিশ্চয় জানিও, এই-সকল বিবাদ সম্পূর্ণ ভ্ৰমাত্মক, আমাদের শাস্ত্র ইহার তীব্র প্রতিবাদ করিয়া থাকে, আমাদের পূর্বপুরুষগণের ইহা সম্পূর্ণ অননুমোদিত, আর যাহাদের বংশধর বলিয়া আমরা দাবি করিয়া থাকি, র্যাহাদের রক্ত আমাদের শিরায় শিরায় প্রবহমান, সেই মহাপুরুষগণ র্তাহীদের সস্তানগণের অতি সামান্য সামান্য বিষয় লইয়া এইরূপ বিবাদকে অতি ঘৃণার চক্ষে দেখিয়া থাকেন। এই-সকল দ্বেষ ও দ্বন্দ্ব পরিত্যক্ত হইলে অন্যান্য বিষয়ে উন্নতি অবশ্যম্ভাবী । যদি রক্ত তাজা ও পরিষ্কার হয়, সে দেহে কোন রোগের বীজ বাস করিতে পারে না । ধর্মই আমাদের শোণিতস্বরূপ । যদি সেই রক্তপ্রবাহ চলাচলের কোন বাধা না থাকে, যদি রক্ত বিশুদ্ধ ও সতেজ হয়, তবে সকল বিষয়েই কল্যাণ হইবে। যদি এই ‘রক্ত’ বিশুদ্ধ হয়, তবে রাজনীতিক, সামাজিক বা অন্য কোনরূপ বাহ দোষ, এমন কি আমাদের দেশের ঘোর দ্রারিদ্র্যদোষ— সবই সংশোধিত হইয়া যাইবে । কারণ যদি রোগের বীজই শরীর হইতে বহিষ্কৃত হইল, তখন আর সেই রক্তে অন্য কিছু বাহ বস্তু কি করিয়া প্রবেশ করিবে ? অাধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রের একটি উপমার সাহায্যে বলা যায়, রোগ হইতে হইলে দুইটি জিনিসের প্রয়োজন—বাহিরে কোন বিষাক্ত জীবাণু এবং সেই শরীরের অবস্থাবিশেষ । যতক্ষণ না দেহ রোগের বীজকে ভিতরে প্রবেশ করিতে দেয়, যতদিন না দেহের জীবনীশক্তি ক্ষীণ হইয়া রোগের বীজ প্রবেশের ও তাহার বৃদ্ধির অমুকুল হয়, ততদিন জগতের কোন জীবাণুর শক্তি নাই যে শরীরে রোগ উৎপন্ন করিতে পারে। বাস্তধিক প্রত্যেকের শরীরের মধ্য